
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনার কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নে ৯১ একরের জলমহাল প্রতারণার মাধ্যমে অন্যকে দখল দেয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গাজীনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মোঃ মুজিবার রহমান। সম্মেলনে তিনি তার জলমহাল ফিরে পাবার দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল রোববার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গাজীনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর মাধ্যমে ‘নারায়নপুরের দোয়ানিয়া বদ্ধ জলমহালটি’
বাংলা সন ১৪২৭ থেকে ১৪৩২ সন পর্যন্ত ইজারা গ্রহণ করি। সেই মোতাবেক আমরা সরকারকে রাজস্ব প্রদান করে আসছি। সর্বশেষ ১৪৩০ সন পর্যন্ত আমরা রাজস্ব প্রদান করেছি। কিন্তু স্থানীয় প্রতারক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন কয়রা ভূমি অফিসের সহায়তায় প্রতারণার করে আমাদের ইজারা বাতিল করে তা জনৈক মোঃ হাফিজুল ইসলামকে পাইয়ে দিতে সহায়তা করে।
তিনি বলেন, এই জলমহালটি আমাদেরকে ইজারা পাইয়ে দিতে সহায়তা করেছিলো জাহাঙ্গীর। তখন সে কু-মতলবে আমার নামে তিন টির পরিবর্তে ৬টি স্ট্যাম্প কিনে রাখে। পরবর্তীতে সেই স্ট্যাম্প ব্যবহার করে আমার স্বাক্ষর জাল করে সাব লীজের ডিড তৈরী করে।
এরপর চলতি বছরের ২ জুলাই তারিখে কপোতাক্ষ মৎস্যজীবী সময় সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নানকে দিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি আবেদন করায়। যাতে উল্লেখ করা হয় আমাদের সমিতির মাধ্যমে গ্রহণ করা জলমহালটি সাব ইজারা প্রদান করা হয়েছে। এই আবেদনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে আমরা আপত্তি প্রদান করি। কিন্তু মান্নানের সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আমাদের ডিড বাতিল করে দেয়া হয়। এর বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে গেলে আদালত থেকে আমরা স্থীতিতাবস্থার নির্দেশ পাই। কিন্তু
আদালতের এই স্থীতিতাবস্থার বিষয়টি জানালেও কয়রা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তা না মেনে উক্ত জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্যদের সাথে আতাতের মাধ্যমে গোপনে ই-বিজ্ঞপ্তির জারি করেন। গত ১২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) জারি করা এই বিজ্ঞপ্তির পরে এসিল্যান্ড ১৫ অক্টোবর নগদমূল্যে জনৈক মোঃ হাফিজুল ইসলামের কাছে জলমহালটি বিক্রি করে দেন। কিন্তু ১৫ তারিখে নগদমূল্যে বিক্রি করে দখল বুঝিয়ে দিলেও সরকারী কোষাগারে সেই টাকা জমা পড়ে আরও তিনদিন পর ১৮ অক্টোবর। হাফিজুল নিজে সেই টাকা জমা দেয়। কিন্তু এই টাকা জমা দেয়ার এখতিয়ার শুধুমাত্র সরকারী লোকের। নগদ টাকা না পেয়েও হাফিজুলকে জলমহাল বুঝিয়ে দেন এসিল্যাণ্ড বিএম তারিক উজ জামান। কিন্তু এরই মধ্যে ১৬ অক্টোবর আমরা উচ্চ আদালতের রায় পেয়ে যাই। যা এসিল্যাণ্ডকে সাথে অবগত করা হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি।
উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এসি ল্যান্ড নিজে জলমহালে উপস্থিত হয়ে আমাদের এবং আমাদের কর্মচারীদেরকে নানা হুমকি-ধামকি দিয়ে জলমহাল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়। এই ঘটনার পরপরই হাফিজুল ও জাহাঙ্গীরের লোকজন জলমহালে গিয়ে ভাংচুর করে এবং আমাদের ব্যবহৃত গ্যাস সিলিণ্ডার, চুলা, নগদ টাকাসহ ক্যাশবাক্স ও অন্যান্য সরঞ্জাম লুট করে নিয়ে যায়। বৈধভাবে গ্রহণ করা জলমহালটি গাজীনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড আবারো ফিরে পাবে সেই প্রত্যাশা করি।