যশোর অফিস : প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য নিজ এলাকায় একজন জনপ্রিয় নেতা হিসেবে বিগত দিনে সুনাম অর্জন করেন। তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা পিযুষ ভট্টাচার্য্য আওয়ামী লীগে কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি। প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এলাকায় চাঁদ ভট্টাচার্য্য হিসেবে পরিচিত। তিনি মনিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই সময় যশোর জেলার সহ-সভাপতি খান টিপু সুলতান বিরোধী একটি শক্তিশালী গ্রুপ তৈরি করেন। ২০০১ সালে খান টিপু সুলতানকে বর্গি উপাধি দিয়ে দলের ভেতরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করা হয়।
॥ কপাল খোলে ২০১৪ সালে ॥
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ভোট বর্জন করায় স্বপন ভট্টাচার্য্য উপজেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে বিদ্রোহী প্রার্থী হন এবং কলস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হয় এবং বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত ৬০টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়ে যায়। বাকী কেন্দ্রগুলোতে আ’লীগ প্রার্থী সাবেক এমপি খান টিপু সুলতান ১২ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে বন্ধ হয়ে যাওয়া ৬০ কেন্দ্রে পুনরায় ভোট হয়। তখন এলাকায় প্রচার ছিল স্বপন ভট্টাচার্য্য গোপনে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে অঘোষিত চুক্তি করেন। বিশেষ করে রাজনৈতিক মামলায় হয়রানি না করা এবং এলাকায় শান্তি বজায় রাখবেন। সে কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া ভোট কেন্দ্রগুলোতে পুনরায় ভোট হয় এবং ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি হয়। কথিত রয়েছে ওই সময় যশোরের এসপি জয়দেব ভদ্রের অনুকম্পা তাকে বিজয়ের পথকে সুগম করে এবং স্বপন ভট্টাচার্য্য বিপুল ভোটে খান টিপু সুলতানকে পরাজিত করেন। ওই সময় তার প্রধান হাতিয়ার ছিলেন, মনিরামপুর উপজেলা আ’লীগের তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন লাভলু। পরবর্তীতে আমজাদ হোসেন লাভলু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও সম্পর্কের অবনতি ঘটে স্বপন ভট্টাচার্য্যরে সঙ্গে। যে কারণে স্বপন ভট্টাচার্য্য নেপথ্যে থেকে সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা খানমকে উপজেলা পরিষদের দলীয় প্রার্থী করতে সক্ষম হন এবং নাজমা খানম বিজয়ী হন। এর পর নাজমা খানমের সঙ্গেও বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এমনকি নাজমা খানম প্রতিমন্ত্রীর এক নিকটাত্মীয় যুবলীগ নেতা কর্তৃক শাররীরিকভাবে আহত হয়ে নিজের প্রাণনাশরে আশঙ্কা করে সংবাদ সম্মেলন করে দেশব্যাপী আলোচিত হন। মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে খান টিপু সুলতানের অনুসারীরা এবং দলে তার বিরুদ্ধে অবস্থানকারীরা এক হয়ে এবার দলীয় প্রার্থী স্বপন ভট্টাচায্যের্েক পরাজিত করতে মাঠে নামে। যার ফলে অতীতে স্বপন ভট্টাচার্য্যরে দেখানো পথেই তার সফল হলেন। আর প্রতিমন্ত্রী নিজেই নিজের পুরানো ফাঁদে আটকে গেলেন।