
জন্মভূমি রিপোর্ট : গ্র্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম প্রধান পটল সবজি। গোপালগঞ্জ-খুলনা- বাগেরহাট -সাতক্ষীরা-পিরোজপুর জিকেবিএসপি প্রকল্প ডুমুরিয়া ও সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় ৪০জন কৃষক ৪০টি প্রদর্শনী প্লটে ৪০ বিঘা জমিতে পটল চাষ করে লাভবান হয়েছেন। ডুমুরিয়ার বরাতিয়া, মালতিয়া, খর্নিয়া গ্রামে মাচায় এবং সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দামুদর কাঠি গ্রামে মাটির বেডে চাষ করা হয়েছে পটল। মাচার চেয়েও বেডের ফলন ভালো হয়। এই প্রকল্প থেকে কুষকদের বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ, বীজ, সার, কীটনাশকমসহ সকল প্রকার উপকরণ প্রদান করা হয়েছে। কৃষক প্রথম অবস্থায় পাইকারী ২০টাকা কেজি বিক্রি করেছেন।
সূত্র জানান, সন্ধ্যা মালতি, বারি-১ ও কানাই বাঁশি জাতের পটল রোপণ করা হয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলন ৩০ থেকে ৩৮ টন। প্রতি গাছে সর্বোচ্চ ২৪০ টি ফল ধরে, যার মোট ওজন প্রায় ১০ কেজি। প্রতি বিঘায় ৩০মন ফলন হয়ে থাকে। টিউবারের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে। শাখা কলমের ক্ষেত্রে পরিপক্ব কান্ড ব্যবহার করা হয়। এদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কান্ড মরে গেলেও শিকড় জীবিত থাকে। ফলে এই শিকড় থেকেই আবার গাছ জন্মে। রোপণের আগে পটোলের শিকড় গজিয়ে নিলে বেশি ভালো হয়।উষ্ণ ও আদ্র্র জলবায়ু পটল চাষের জন্য বেশি তাপমাত্রা ও সূর্যালোকের প্রয়োজন। বন্যামুক্ত ও পানি জমে না এমন বেলে দো-আঁশ বা দো-আঁশ মাটি পটল চাষের জন্য ভাল। নদীর তীরে পলিযুক্ত মাটিতেও পটল চাষ করা যায়। অক্টোবর থেকে নভেম্বর অথবা ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পটোল রোপণের উপযুক্ত সময়। প্র্রথমে মাটি ভালো করে চাষ দিয়ে প্রস্তুত করে নেয়া উচিত। জমিকে ৪-৫টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা ও সমান করে নিতে হবে। বেড পদ্ধতিতে পটল চাষ করলে ফলন ভালো হয় এবং বর্ষাকালে ক্ষেত নষ্ট হয় না। সাধারণত একটি বেড ১.০-১.৫ মিটার চওড়া হয়। বেডের মাঝামাঝি এক মিটার থেকে দেড় মিটার বা দু’হাত থেকে তিন হাত পর পর মাদায় চারা রোপণ করতে হয়। গোবর বা আবর্জনা সার ভালোভাবে পচানো দরকার। পটল দীর্ঘমেয়াদি সবজি ফসল, এ জন্য মে মাস থেকে ফসল সংগ্রহর পর প্র্রতি মাসে হেক্টর প্রতি ১৮ কেজি ইউরিয়া, ২৫ কেজি টিএসপি এবং ১৪ কেজি এমপি সার উপরি প্র্রয়োগ করা প্রয়োজন। এতে ফলন বেশি হবে। কচি অবস্থায় সকাল অথবা বিকালে পটল সগ্রহ করতে হবে । সাধারণত জাতভেদে ফুল ফোটার ১০-১২ দিনের মধ্যে পটল সংগ্রহের উপযোগী হয়।
ডুমুরিয়ার বরাতিয়া গ্রামের কৃষক প্রফুল্ল মন্ডল ও কলারোয়ার দামোদরকাঠি গ্রামের ফজর আলী বলেন, আমরা এই প্রকল্প থেকে অনেক উপকার পেয়েছি। সব কিছু বিনা মূলে পেয়েছি। প্রথম অবস্থায় ভালো দামে পটল বিক্রি করতে পেরেছি। গোপালগঞ্জ-খুলনা- বাগেরহাট -সাতক্ষীরা-পিরোজপুর জিকেবিএসপি প্রকল্প পরিচালক অমরেন্দ্রনাথ বিশ^াস বলেন, পটল চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। ভালো দামে বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও বিক্রি করছেন। কৃষক অর্থনৈতিক ভাবে ঘুরে দাড়িয়েছেন। প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কোন জমি পতিত ফেলে না রেখে আবাদ করা হয়েছে। সে মোতাবেক কৃষকদের ফসল ফলাতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। কৃষকদের কীটনাশক ও সার বিনামূল্যে এই প্রকল্প থেকে দেয়া হয়েছে।