জন্মভূমি ডেস্ক
পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে সবধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। শুক্রবার (২৪ জুন) দুপুরে মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় জনসভাস্থল পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, জনসভাস্থল শেষে সবাই নিরাপদে বাড়ি যেতে পারে সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এখানে এসএসএফ, ডিজিএফআই, এনএসআই, জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, নৌপুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের হুমকি রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, প্রতি মুহূর্তে আপডেট তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে শুধু জনসভাস্থলই নয়, সারাদেশেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা প্রস্তুত রয়েছে।
পুলিশ প্রধান আরো বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পুলিশ বাহিনীও উদযাপন করবে। এজন্য সারাদেশের পুলিশ সদস্যরা বাহিনীর পক্ষ থেকে আনন্দ উৎসব করবে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, র্যাব-৮ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি জামিল হাসান, মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
\ প্রতি ১০ গজে র্যাব-পুলিশ, আকাশে হেলিকপ্টার \
জনসভাস্থল ও আশেপাশে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছেজনসভাস্থল ও আশেপাশে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ (২৫ জুন) দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে এক বিশাল জনসমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে জনসভার মঞ্চ। জনসভাস্থলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট এবং আশপাশের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা। সভাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়। দিন গড়িয়ে বিকাল পর্যন্ত জনসভাস্থল ও আশপাশে তাদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।
এদিকে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট ছাড়াও ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর ও জাজিরা এলাকায় র্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতি ১০ গজ পর পুলিশ, র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল থেকেই আকাশে হেলিকপ্টারের মহড়া দেখা গেছে।
এদিকে সকাল থেকেই বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল টিমের গাড়ি দেখা গেছে। এ ছাড়াও সকাল ১০টার দিকে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বেলা ১১টার দিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বাংলাবাজার ফেরিঘাটে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল পরিদর্শনে আসেন।
এদিকে জনসভাকে ঘিরে পুরো মাদারীপুরবাসীর মধ্যে বইছে উদ্দীপনা আর আনন্দ। পুরো ঘাট এলাকায় একসঙ্গে এত পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দেখে বিস্মিত হন তারা। অনেকেই বলেন, জীবনে এরকম নিরাপত্তা আয়োজন দেখিনি।
ঘাট এলাকার যুবক দেলোয়ার হোসেন বলেন, পুরো ঘাটে পুলিশ-র্যাব। আকাশেও পর পর তিন-চারটি হেলিকপ্টার দেখছি। এসএসএফ মঞ্চের আশপাশে কাউকে যেতে দিচ্ছে না। তবে আমরা অনেক আনন্দিত আমাদের এলাকায় এমন একটি জনসভা হবে।
সুজন পাল বলেন, কাল জনসভা এলাকায় লোকজন নিয়ে আসবো। আজ আগেই এসেছি, একটু এলাকাটা দেখবো বলে। তবে এত পুলিশ-র্যাব কখনও দেখিনি।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘কাল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই এলাকায় আসবেন। আমরা তার আগমনকে ঘিরে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। তা ছাড়া আমরা এসএসএফের সঙ্গে সমন্বয় করে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। সকালে ঘাটে আমাদের আইজিপি মহোদয় এসেছিলেন। তিনি সার্বিক প্রস্তুতি ঘুরে দেখেন এবং ব্রিফিং করেন।