
জন্মভূমি ডেস্ক : খুলনা জেলার পাইকগাছার কপিলমুনি ইউনিয়নের তালতলা গ্রামের আদিত্য মন্ডলের স্কুল পড়ুয়া মেয়ের (১৩) অপহরণকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
রোববার (১৪মে) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের (বিডিইআরএম ) খুলনা জেলা শাখার সভাপতি সুব্রত কুমার মিস্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আদিত্য মেয়েকে ২ মে ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরখালি হাই স্কুলের সামনে থেকে আনুমানিক সময় বেলা সাড়ে ৯ টায় অপহরণ করা হয়। এই ঘটনার পর বিডিইআরএম এর নেতৃবৃন্দ ঘটনা স্থল পরিদর্শন কালে, অপহৃতের কাকা কৃষ্ণপদ মন্ডল আমাদের বলেন যে এই দুস্কর্মের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা হলেন খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার সাজিয়াড়া গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা ১। সালমান শেখ (১৯) পিতাঃ মোস্তফা শেখ, ২। রসুল শেখ (২৩) পিতাঃ মোস্তফা শেখ, পেশা- নাগরদোলা শ্রমিক। মেয়ে প্রতিদিন বাড়ি থেকে দুই মাইল দূরে নদী পেরিয়ে ভ্যানে বা পায়ে হেঁটে ডুমুরিয়া মাগুরখালি হাই স্কুলে ৭ম শ্রেনীতে পড়াশুনা করে। তার বিবরন অনুযায়ি আমাদের নেতৃবৃন্দ স্কুলের সামনে প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন যে আগে থেকে মটর সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দুই আসামি রসুল শেখ ও সালমান শেখ জেরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর থেকে তার আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার পর মেয়ের বাবা আদিত্য মন্ডল মোস্তফা শেখের বাড়ি গিয়ে তার মেয়ের কথা জানতে চাইলে মোস্তফা শেখ ও তার বাড়ির লোক বলেন যে আমরা এইসব বিষয়ে কিছু জানিনা এবং তার প্রতি খারাপ ব্যবহার করেন। অতঃপর আদিত্য মন্ডল থানায় এসে গত ৫ মে একটি এজাহার দাখিল করেন। কিন্তু আজ পার্যন্ত আসামিদের মধ্যে কউই ধরা পড়েনি। কিশোরী মেয়ের পরিবারের লোক আমাদের বলেন যে বিগত ৬ মাস যাবৎ স্কুলে যাওয়া আসার সময় সালমান শেখ তাকে পথে ঘাটে যেখানে সেখানে অশ্লীল অঙ্গ ভঙ্গী ও কুপ্রস্তাব দিচ্ছিল কিন্তু আমার মেয়ে ঐসকল প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বিষয়টি আমাদের অবহিত করে। আমাদের মেয়ের নিকট থেকে এই ঘটনা জানার পর সালমান শেখকে এসব না করতে নিষেধ করি এবং তার বড় ভাই রসুল শেখ ও পিতা মোস্তফা শেখকে বিষয়টি জানানো হয় কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি উপরন্তু সালমান শেখকে এই বিষয়ে উৎসাহ দিতে থাকে ,তারই ফলস্বরূপ আজ এই দুস্কর্ম সংঘটিত হয়েছে। এত কিছু ঘটার পরও পুলিশের তেমন কোন তৎপরতা চোখে পড়ার মত নয়। তাই আমরা বিডিইআরএম সরকার, প্রশাসন, পুলিশ বাহিনি, র্যাব এর মাধ্যমে আসামিদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহন ও কিশোরী মেয়েকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবী জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে অপহৃতের বাবা আদিত্য মন্ডলও কাকা কৃষ্ণপদ মন্ডল সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তারা অপহৃত মেয়েকে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের কাছে আকুতি জানান। একই সাথে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বিডিইআরএম ও নাগরিক উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিডিইআরএম এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিভূতোষ রায়, কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নিশিত রঞ্জন মিস্ত্রী, বিডিইআরএম এর জেলা শাখার উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুল হালিম, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি ও বিডিইআরএম এরসহ-সভাপতি প্রসেনজিৎ দত্ত, সাধারণ সম্পাদক শিবপদ দাস, নাগরিক উদ্যোগের বিভাগীয় কোডিনেটর মো. রহিদুল ইসলাম প্রমুখ।