
পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা : প্রতিনিয়ত অগ্নিকাণ্ডে জ্বলছে পাইকগাছা উপজেলার কোনো না কোনো এলাকা। ভস্মীভূত হয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্তরা। নিরুপায় হয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকাই সার। টিউবওয়েল এর চাপে, বালতি, গামলায় করে পানি নিয়ে নিভিতে জনসাধারণের নিষ্ফল আপ্রাণ চেষ্টা। আগুনের লেলিহান শিখার কাছে হার মানতে হয়। সংবাদ পেয়ে পার্শ্ববর্তী সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে সব কিছু ভস্মীভূত। এমনই ঘটনায় পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে এভাবেই সর্বশান্ত হচ্ছে এঅঞ্চলের অধিবাসীদের। পার্শ্ববর্তী সকল উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকলেও মূলত এখানকার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্মব্যক্তিরদের সদিচ্ছার অভাব বলি আর ব্যর্থতা যেটাই বলি আজও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ সম্ভব হয়নি। এই উপজেলায় একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দ্রুত নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসী আকুল আবেদন জানিয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাতে দেড়টার দিকে পাইকগাছা পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্রে বাতিখালী ৬ নং ওয়ার্ডের হক মার্কেটের কাঠগোলয় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কি কারণে, কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হল তার সুনির্দিষ্ট কারণ উদঘাটন না হলেও বিদ্যুৎ এর শর্টসার্কিট বা কয়েল থেকে হতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আগুন লেগে দুটি কাঠগোলা ও একটি আবাসিক বাড়ির কাঠের ঘর পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে।এতে গোলা দুটির মালিকের অন্তত ৫-৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং আবাসিক বাড়ির কাঠ ঘর পুড়ে দেড় লাখ টাকার বেশি ক্ষতি সাধন হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পেয়ে চেঁচামেচি করে এতে লোকজন জড়ো হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হন। কাঠগোলার পার্শ্ববর্তী বাড়ি থেকে স্থানীয় দেবাশীষ মন্ডল তার ভাই কমলেশ মন্ডল কে আগুন লাগার ঘটনা জানান। কমলেশ মন্ডল ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা তিনি তাৎক্ষণিক ভাবে পাইকগাছার পার্শ্ববর্তী উপজেলা কয়রা ও আশাশুনি সাতক্ষীরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে অবহিত করেন কিন্তু পাইকগাছা উপজেলা থেকে পার্শ্ববর্তী উপজেলার দূরত্ব ৪০ থেকে ৫০ কি:মি হওয়া সেখান থেকে আসতে আসতে দুটি কাঠগোলা ও একটি আবাসিক বাড়ির কাঠের ঘর পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত জয় মা ফার্নিচার এর মালিক প্রকাশ বাছাড় তিনি সাংবাদিকদের জানান, কোনদানি, জালিকাটা মেশিন মটর, রোডার, গ্রান্ডিং, ডিল মেশিন এবং ফার্নিচার দরজা-জানালা, শোকেজ, ওয়ারড্রব, সোফা, মিটসেফ, বসার আসন, আলমারি, মেহগনি, বাদাম, কাঁঠাল, নিম, শিরিষ, কাঠের তক্তা সহ ৪ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মিজান ফার্নিচার এর মালিক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন আমার ঘরে অনেক টাকার কাঠ ও মেশিন ছিলো যার মূল্য আনুমানিক ২ লক্ষ টাকার অধিক যা পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। আবাসিক বাড়ির মালিক রেজাউল হক জানান, আমার একটি কাঠের ঘর পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে সেখানে দেড় লাখ টাকার বেশী মালামাল পুড়ে গেছে। আমার ছাদ করার জন্য তক্তা কাটানো ছিলো আবার হাঁস মুরগী সহ অনেক কিছু ছিলো তাতে দেড় লাখ টাকার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সংবাদ পেয়ে ছুটে আসা সাতক্ষীরার আশাশুনি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল কালাম মোড়ল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা রাত ২:১০ মি. খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। রাত ৪ টার সময় পুরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এদিকে, পাইকগাছায় প্রায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কম হতো। এজন্য অতিদ্রুত ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী, নবনির্বাচিত স্থানীয় সংসদ সদস্য সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আর্তি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।