জন্মভূমি ডেস্ক : পাকিস্তানে পুলিশ স্টেশনে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পুলিশের আরও ৬ সদস্য।
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশের একটি থানায় এই হামলা ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে একটি থানায় জঙ্গি হামলায় কমপক্ষে ১০ পুলিশ সদস্য নিহত এবং আরও ছয়জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। পাকিস্তানে আগামী বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে এবং এর মাত্র তিন দিন আগে এই হামলার ঘটনা ঘটল।
মূলত পাকিস্তানে জঙ্গিদের আক্রমণ বেশ বেড়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানি তালেবান এবং সরকারের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙ্গে যাওয়ার পর নিরাপত্তা কর্মীদের লক্ষ্য করে ২০২২ সাল থেকে এই ধরনের হামলা বেশ বেড়েছে।
রয়টার্স বলছে, সোমবারের এই হামলাটি সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৩ টায় ঘটে। এসময় জঙ্গিরা প্রথমে স্নাইপার ব্যবহার করে কনস্টেবলদের ওপর হামলা চালায় এবং এরপর তারা থানায় প্রবেশ করে বলে পাকিস্তানের ড্রাবান অঞ্চলের পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ড্রাবানের উপ-পুলিশ সুপার মালিক আনিস উল হাসান বলেছেন, ‘থানার ভবনে প্রবেশ করার পর সন্ত্রাসীরা হ্যান্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে। যার ফলে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটে।’
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে একটি পুলিশ স্টেশন কমপ্লেক্সে স্থাপিত সামরিক ঘাঁটিতে বিস্ফোরক বোঝাই ট্রাক দিয়ে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। ছয় সদস্যের আত্মঘাতী স্কোয়াডের চালানো সেই হামলায় একইভাবে অন্তত ২৩ জন সৈন্য নিহত হয়েছিল।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে পাকিস্তানে গত কয়েকদিনে সহিংসতাও বেশ বেড়েছে।
অন্যদিকে পৃথক প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং বেলুচিস্তানে নিরাপত্তা উদ্বেগ বেড়েছে। মূলত উভয় প্রদেশই গত কয়েকদিন ধরে একাধিক হামলার সাক্ষী হয়েছে।
খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী বিচারপতি (অব.) আরশাদ হুসেন শাহ সোমবারের এই হামলার নিন্দা করেছেন এবং প্রাণহানির জন্য শোক প্রকাশ করেছেন।
এক বিবৃতিতে তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
আরশাদ হুসেন শাহ বলেছেন, প্রদেশে শান্তির জন্য খাইবার-পাখতুনখাওয়ার পুলিশ ‘সর্বোচ্চ ত্যাগ’ স্বীকার করেছে এবং ‘এই ধরনের কাপুরুষোচিত হামলা তাদের মনোবল নষ্ট করবে না’।
সরকার শোকাহতদের ‘সকল উপায়ে’ সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি।