
তালা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা শ্রমজীবী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লি. (রেজি: নং-৩৭/সাত, সংশোধিত নং-৩৬/সাত, সংশোধিত নং-০১/সাত) এর ঝাউডাঙ্গা ব্র্যাঞ্চ থেকে গ্রাহকের প্রায় সাত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এড. মো. ওয়ালিউর রহমান বাদী হয়ে ৭জনকে আসামি করে সাতক্ষীরা সদর থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। আসামীরা হলেন-পাটকেলঘাটা শ্রমজীবি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লি. এর ঝাউডাঙ্গা ব্র্যাঞ্চের ব্যবস্থাপক মো. পিকুল হোসেন, তার পিতা মো. হবিবর রহমান দালাল, মাতা মোসা. তাছলিমা খাতুন, স্ত্রী নিগার সুলতানা মুন্নি, মো. পিকুল হোসেনের ড্রাইভার মো. সালাউদ্দীন, আসামী পিকুল হোসেনের ধরম দুলাভাই মো. মাসুদুর ও চাচাতো ভাই মো. নাজমুল হুদা।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পাটকেলঘাটা শ্রমজীবি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লি. এর চাকরির জন্য গ্রান্টার হিসেবে লিখিতভাবে উক্ত সমবায় সমিতিকে অঙ্গীকারনামা দিয়ে ঝাউডাঙ্গা সেবা কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক পদে মো. পিকুল হোসেন প্রস্তাব করেন। উক্ত অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করেন মো. পিকুল হোসেনসহ তার সুপারিশকৃত ব্যক্তিদের (এজাহার নামীয় আসামীরা) নিয়োগ দিলে তারা প্রতিষ্ঠানের সব দায় দায়িত্ব বহন করবেন। এছাড়া সমবায় সমিতিতে কোনো অনিয়ম বা অর্থ আত্মসাৎ করলে দায়ভার নিজেরা বহন করবেন। ওই অঙ্গীকারের শর্তে মো. পিকুল হোসেন বিগত ২০১৭ সালের ৯ মার্চ সমিতির ঝাউডাঙ্গা সেবা কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক পদে যোগদান করেন এবং অদ্যবধি তিনি চাকরিরত আছেন। তিনি চাকরিতে থাকাকালীন বিগত ২০২২ সালের জুন মাসের হিসাবসহ ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত হিসাব মিল করে দিতে ব্যর্থ হয়। বার বার তাকে মৌখিকভাবে এবং লিখিতভাবে হিসাব চাওয়ার পরও হিসাব বুঝিয়ে দেয়নি। পরবর্তীতে অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ঋণ ফর্ম, ঋণ রেজিস্টার, সদস্য ভর্তি ফর্ম, রেজিস্টার, খতিয়ান খাতা, ক্যাশ খাতা, চেক বই, ক্যাশ মেমোসহ অফিসিয়াল কোন তথ্য উপাত্ত না দিয়ে মো. পিকুল হোসেন অনিয়মিত অফিস করছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে ঢাকাতে এবং তার বাড়িতে বসে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের মে মাসে সমিতির পরিচালনা কমিটির সদস্যরা ঝাউডাঙ্গা সেবা কেন্দ্র অডিট করে।
অডিট শেষে জানা যায়, মো. পিকুল হোসেন ভূয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে প্রায় সাত কোটি টাকা লোন পাশ দেখিয়ে উপরোক্ত আসামিদের যোগসাজসে আত্মসাৎ করেছেন। এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রাহকের গচ্ছিত টাকা মো. পিকুল হোসেন, তার পিতা মো. হবিবর রহমান দালাল, মাতা মোসা. তাছলিমা খাতুন ও স্ত্রী নিগার সুলতানা মুন্নির নামে ব্যাংকে গচ্ছিত করে রেখেছেন। এছাড়া মামলার ৬নং আসামি মো. মাসুদুর রহমান এবং তার চাচাতো ভাই ৭নং আসামি মো. নাজমুল হুদার নামে-বেনামে ঢাকাতে রিয়েল এস্টেট বা ডেভোলপারের বিজনেস শুরু করেছেন। এছাড়া এজাহার সূত্রে এলাকার লোকজনের ভাষ্যমতে ১নং আসামী পিকুলের ড্রাইভার মামলার ৫নং আসামী মো. সালাউদ্দীনের তত্বাবধানে অত্র সমবায় সমিতির যাবতীয় ফাইলপত্র ও নথি গোপনে সংরক্ষিত আছে। এলাকার হতদরিদ্র খেটে খাওয়া শ্রমিকদের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাৎ করায় গত ২ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।