জন্মভূমি ডেস্ক : রাজধানীর নয়াপল্টন ও কাকরাইল মোড়ে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে পেশাগত দায়িত্বপালনের সময় বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী হামলার শিকার হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট এলাকায় দায়িত্বরত সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, দৈনিক ইত্তেফাক, কালবেলা, সময় টিভি, যমুনা টিভিসহ একাধিক গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা হামলার শিকার হয়েছেন।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলার শিকার হন তারা।
কাকরাইলে সংঘর্ষে ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ঢাকা টাইমসের প্রতিবেদক সালেকিন তারিন। তাকে চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) নেওয়া হয়েছে।
গুরুতর আহত অবস্থায় দৈনিক কালবেলার প্রতিবেদক রাফসান জনিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ব্রেকিংনিউজের ক্রাইম রিপোর্টার কাজী ইহসান বিন দিদার, আক্রান্ত হোন ব্রেকিংনিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক আহসান হাবিব সবুজ, ইনকিলাব পত্রিকার ফটোসাংবাদিক এফ এ মাসুমসহ আরও অনেকে।
রাফসানের সঙ্গে থাকা কালবেলার জ্যৈষ্ঠ প্রতিবেদক রাজন ভট্টাচার্য জানান, কাকরাইল মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ চলাকালে ভিডিও ফুটেজ নিচ্ছিলেন সাংবাদিক রাফসান জানি। পুলিশের ওপর হামলার এই ফুটেজ সংগ্রহকালে দুষ্কৃতকারীরা রাফসানের ওপর হামলা চালায়।
তিনি বলেন, “এ সময় রাফসানের গলায় কালবেলার আইডিকার্ড ঝুলানো থাকলেও তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। হামলায় তার সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। এছাড়া তার মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। তার অবস্থা গুরুতর।”
গত ১৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার জন্য ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। এরপর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা তৈরি হয়। একইদিনে সমাবেশের ঘোষণা দেয় গণতন্ত্র মঞ্চ, জামায়েতে ইসলামী বাংলাদেশ, এপি পার্টি, এনডিএম, গণঅধিকার পরিষদসহ বেশ কয়েকটি সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল।
অন্যদিকে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। ঢাকায় একই দিনে অনেকগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি নিয়ে বিএনপি পুলিশের ওপর হামলা করছে।
আর বিএনপির দাবি, তাদের সমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ হামলা চালিয়েছে।
এ অবস্থায় মহাসমাবেশ স্থগিত করে আগামীকাল রবিবার সারাদেশে হরতালের ডাক দিয়েছে মাঠের প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপি।
শনিবার দুপুর ১টার কিছু আগে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপি নেতারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এরপর পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে শুরু করে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা কাকরাইল মসজিদের সামনের পুলিশ বক্স ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেন।
তারও আগে বেলা সোয়া ১২টার দিকে কাকরাইল মসজিদের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বহনকারী একটি বাস ও দুটি পিকআপে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা বাস ও পিকআপ ভাঙচুর চালান। আওয়ামী লীগের অভিযোগ, বিএনপি নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে।