জন্মভূমি ডেস্ক : পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হবে নভেম্বরে। ডিসেম্বর থেকে এই মজুরি কাঠামো কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। মঙ্গলবার বিজিএমইএ প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হাসান এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হাসান বলেন, ‘ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত আসবে নভেম্বরেই এবং তা ডিসেম্বরেই কার্যকর করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের কষ্ট হচ্ছে আমরা জানি। কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতি এখন সংকটে আছে। আমাদের পোশাক রপ্তানি কমে গেছে। এ অবস্থায় আমরাও খুব একটা ভালো নেই।’
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি একটি কঠিন সময় পার করছে। এরচেয়ে কঠিন অবস্থায় আছে দেশের পোশাক শিল্প। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি কমেছে বিশ্বব্যাপী ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশ থেকে তাদের আমদানি কমেছে ২৯ দশমিক ১০ শতাংশ। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো আমদানি কমিয়েছে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কমেছে ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী আমদানি কমেছে ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং বাংলাদেশের কমেছে ১৫ দশমিক ০৭ শতাংশ। সার্বিকভাবে দেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ২২ দশমিক ২৭ শতাংশ।
ফারুক হাসান বলেন, পোশাক শিল্প মালিকরা যদি মনে করেন তাদের শ্রমিকদের নিরাপত্তা, কারখানার নিরাপত্তা এবং সম্পদ রক্ষায় শ্রম আইনের ১৩/১ ধারায় কারখানা বিনা নোটিসে বন্ধ করতে পারবে। এজন্য কোনও বেতন দিতে হবে না মালিকদের। এছাড়া আসছে নভেম্বর মাসে যে ঘোষণা মজুরি বোর্ড দিবে তা বিজিএমইএ মেনে নিয়ে ডিসেম্বরেই বেতন দেওয়া হবে।
ফারুক হাসান বলেন, আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, গত কয়েকদিন ধরে বহিরাগতদের উসকানিতে কিছু পোশাক কারখানায় শ্রমিক ভাই বোনেরা কাজ না করে কারখানা থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন, কারখানা ভাঙচুর করছেন, ফলে অনেক উদ্যোক্তা বাধ্য হচ্ছেন কারখানা বন্ধ করে দিতে। আরও উদ্বেগের বিষয় হলো— বহিরাগতদের উসকানির কারণে পোশাক কারখানার সঙ্গে বেশ কিছু লেদার কারখানা, ক্যামিকেলের গো-ডাউন, ফ্যাব্রিক্সের গো-ডাউন, দোকানপাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের অবদানেই শিল্প বর্তমান পর্যায়ে আসতে পেরেছে। এমন কিছু করবেন না যাতে করে শিল্পের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, ক্রেতাদের আস্থা বিনষ্ট হয়। এমন কোনো কাজ করবেন না, যাতে করে শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ ক্রেতারা শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে আর আপনারা কর্মহীন হয়ে পড়বেন, যা কাম্য নয়।
বক্তব্যের শুরুতে মৃত শ্রমিকদের প্রতি মাগফিরাত এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। পাশাপাশি পোশাক মালিকদের ক্ষতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন