জন্মভূমি ডেস্ক : বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং বিনিয়োগ ও শিল্প খাতে স্থবিরতার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি কমবে। তাতে চলতি অর্থ বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতিও থাকবে চড়া। বিশ্ব ব্যাংকের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা শীর্ষক প্রতিবেদনের জানুয়ারি (২০২৫) সংস্করণে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছর নিয়ে এসব পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়েছে। শুক্রবার সংস্থাটির সদর দপ্তর থেকে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। খবর সকাল সন্ধ্যা।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের গতি কমিয়েছে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমেছে। এর ফলে গত বছরের ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসবে। তবে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা বেড়ে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে।
গত জুনে প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক প্রসপেক্টস’ প্রতিবেদনে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক। হিসাব বলছে, জুনের চেয়ে জানুয়ারির পূর্বাভাস ১ দশমিক ৬ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়েছে সংস্থাটি। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেটে আওয়ামী লীগ সরকার ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। সেই হিসাবে বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস সরকারি লক্ষ্যের চেয়ে বেশ কম।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এর হিসাবে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। তবে বিশ্ব ব্যাংক বলেছে, গত অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ শতাংশ। গত বছরের ক্ষেত্রেও তার নিম্নমুখী সংশোধন এনেছে। বিশ্ব ব্যাংকের আগের প্রাক্কলন ছিল, গত অর্থ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এখন তার চেয়ে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়েছে।
যদিও দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে প্রকাশিত শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জিডিপি বাড়িয়ে দেখানো হতো। দেশে তিন বছর ধরে মানুষের প্রকৃত আয় কমছে। জ্বালানি সংকট ও আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং পণ্য সরবরাহে বিঘ্ন শিল্পে উৎপাদন কর্মকান্ডে প্রভাব ফেলেছে। ফলে পণ্যের দাম বেড়েছে। তা মানুষের প্রকৃত আয় কমিয়ে দিয়েছে। তবে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী-সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে মানুষের আয় বেড়েছে ৮ শতাংশের কিছু বেশি। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম, অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের গতি কমিয়েছে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমেছে। চলতি বছর জিপিডির প্রবৃদ্ধি কমলেও আগামী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) তা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিযয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির আশা আছে। সঙ্গে আর্থিক খাতে সংস্কার হতে পারে, ব্যবসার পরিবেশে উন্নতি হতে পারে এবং বাণিজ্য বাড়বে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি কমবে, বিনিয়োগ বাড়বে। (সংক্ষেপিত)।
বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের উদ্বেগ
Leave a comment