ইতিহাস, রাজনীতি বিজ্ঞান আর আইনে মাস্টার্স শেষ করে কলেজ শিক্ষক আর সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি নিজেকে তুলে এনেছিলেন রাজনীতির শীর্ষে। হয়েছিলেন বাঙালি হিসেবে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি। দলের বাইরেও উপমহাদেশের রাজনৈতিক পরিমন্ডলে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা তাঁকে রাজনীতিতে বিশেষ মর্যাদায় তুলে এনেছিলো। যিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদটি ছাড়া কার্যত প্রায় সব শীর্ষপদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তাঁর আর এক বড় পরিচয় তিনি ছিলেন বাংলাদেশের পরমমিত্র। যার কথা বলছি তিনি প্রণব কুমার মুখোপাধ্যায় হলেও প্রণব মুখার্জি নামেই অভিহিত। তাঁর রাজনৈতিক কর্মজীবন ছয় দশকব্যাপী। ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা। তাঁকে বলা হতো কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় সমস্যা-সমাধানকারী নেতা। প্রণব মুখার্জি বিভিন্ন সময়ে অর্থ, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, রাজস্ব, জাহাজ-চলাচল, পরিবহন, যোগাযোগ এবং শিল্প ও বাণিজ্য’র মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের বিরল কৃতিত্বের অধিকারী। দেশের প্রতি অবদানের জন্য তাঁকে ভারতের সর্বোচ্চ ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরতœ ও পদ্মবিভ‚ষণ প্রদান করা হয়েছে। সাউথ বøকে তিনি পরিচিত ড্যামেজ কনট্রোল ম্যানেজার রূপে। আর ভারতীয় রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
তাঁর আত্মজীবনীর প্রথম খÐে লিখেছেন, ‘১৫ জুনের (১৯৭১) বাজেট অধিবেশনে আমি রাজ্যসভায় বললাম, ভারতের উচিত বাংলাদেশকে ক‚টনৈতিক স্বীকৃতি দেওয়া। এর জন্য বাংলাদেশের নির্বাচিত মুজিবনগর সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। আমি রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলছি। বলছি, সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা। এই রাজনৈতিক সমাধানের সূচক হিসাবে আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশকে জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্যের কথা, সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বার্থে।’ বাংলাদেশের সঙ্গে ১৯৭১ সাল থেকে শুরু হওয়া সম্পর্কটা রয়েই গেল মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সমর্থন ও স্বীকৃতির জন্য অনবদ্য অবদান রাখা মুখার্জির অসীম মমতা ছিলো বাংলাদেশের প্রতি। তৈরি হওয়া সেই সম্পর্ক তিনি সযতেœ যেমন লালন করেছেন তেমনি দীর্ঘ সময় ভারতের অর্থমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে প্রতিবেশী বাংলাদেশের নীতিনির্ধারণী বিষয়ে প্রভাব বিস্তারেরও সুযোগ পেয়েছেন।
প্রণব মুখার্জি সবসময় বলতেন, বাংলাদেশ আর ভারতের সম্পর্কটা নিছক দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক নয়। বলতেন দুটি দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভাষা সব নিয়ে নাড়ির বন্ধন ও অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বরাবরই প্রণব মুখার্জিকে তাঁর একজন পারিবারিক অভিভাবক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, তিনি সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছেন। শুধু ভারতে না, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তাঁর একটা অবস্থান ছিল এবং আমাদের পাশে সবসময় ছিলেন; এটাই হলো বড় কথা। তিনি খুব প্রজ্ঞা একজন রাজনীতিবিদ, সব কিছুতেই একটা দূরদর্শী চিন্তা ছিল। এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই প্রকৃত বন্ধু হিসেবে প্রণব মুখার্জিকে মনে রাখবে বাংলাদেশ। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ প্রণব মুখার্জি নিজেই ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান। উপমহাদেশের রাজনৈতিক পরিমন্ডলে তাঁর বিচরণ ও অবস্থান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায়, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জনের পরতে পরতে ওতপ্রতভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।
প্রণব মুখার্জির জন্ম ১৯৩৫ সালের ১১ ডিসেম্বর অবিভক্ত ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের বীরভ‚ম জেলার কীর্ণাহার শহরের নিকটস্থ মিরাটি গ্রামে। মাতার নাম রাজল²ী দেবী ও পিতা কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায়। বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী কামদাকিঙ্কর ১৯২০ সাল থেকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ব্রিটিশ শাসনকালে তিনি ১০ বছর কারারুদ্ধ ছিলেন। প্রণব মুখার্জি সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র ছিলেন; এই কলেজটি সেই সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। ১৯৫৭ সালের ১৩ জুলাই প্রণব মুখার্জি পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন শুভ্রা ঘোষের সঙ্গে। শুভ্রাদেবী বাংলাদেশের নড়াইল জেলার সদর উপজেলার ভদ্রবিলা গ্রামের মেয়ে। এই দম্পতির দুই ছেলে, ইন্দ্রজিৎ মুখার্জি ও অভিজিৎ মুখার্জি ছাড়াও একমাত্র মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। বড় ছেলে অভিজিৎ মুখার্জি পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গিপুর আসন থেকে দুবার কংগ্রেসের মনোনয়নে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া শর্মিষ্ঠা একজন কত্থক নৃত্যশিল্পী।
প্রণব মুখার্জি কর্মজীবনের শুরুতে কলকাতায় ডাক বিভাগের কারণিক পদে যোগ দেন। এরপর একজন শিক্ষক রূপে আত্মনিয়োগ। পরে তিনি সাংবাদিকের কাজও করেন কিছুকাল। এই সময় তিনি ‘দেশের ডাক’ নামে একটি পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রণব মুখার্জি কর্মজীবনে প্রথম দিকে হাওড়া জেলার বাঁকড়ায় অবস্থিত বাঁকড়া ইসলামিয়া হাইস্কুলে দুই বছর শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আমতলার নিকটস্থ বিদ্যানগর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন। বিদ্যানগর কলেজে যোগ দেয়ার পরে টানা পাঁচ বছর আমতলায় ছিলেন। রিকশায় যাতায়াত করতেন প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরের কলেজে। মুখার্জি দম্পতির পছন্দও হয়ে গিয়েছিল জায়গাটি। সেখানে থিতু হওয়ার জন্য জমিও কিনেছিলেন। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কারনে।
রাজনীতিতে প্রণব মুখার্জির উত্থান হয়েছিল কার্যত তরতরিয়ে। ১৯৬৬ সালে বিদ্যানগর কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হরেন্দ্রনাথ মজুমদারের হাত ধরে শুরু হওয়া রাজনৈতিক অভিযাত্রা তাঁক টেনে নিয়ে যায় অনেক দূরের অন্য ঠিকানায়, অনন্য উচ্চতায়। সংসদীয় রাজনীতির ইনিংস শুরু করার পরই প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নজরে পড়েন তিনি। ১৯৬৯ সালে তদনীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাহায্যে প্রণব মুখার্জি ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচিত হন। এরপর রাজনৈতিক কর্মজীবনে তাঁর দ্রæত উত্থান শুরু হয়। তাঁকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি ইন্দিরা গান্ধীর একজন বিশ্বস্ত সহকর্মীতে পরিণত হন। ১৯৭৩ সালে কেন্দ্রীয় শিল্পোন্নয়ন উপমন্ত্রী হিসেবে তিনি প্রথম ক্যাবিনেটে যোগদান করেন। এরপর ১৯৭৫, ১৯৮১, ১৯৯৩ ও ১৯৯৯ সালেও তিনি রাজ্যসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। ক্যাবিনেটে ক্রমান্বয়ে পদোন্নতির পর ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভার দলনেতার ছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী তাঁর মেধায় আকৃৃষ্ট হয়ে বড় বড় নেতাদের রেখে তাঁকেই নাম্বার টু হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এক সময় তাঁকে ইন্দিরা গান্ধীর মানসপুত্র বলা হতো। ৪৭ বছর বয়সে ১৯৮২ সালে তাঁকে অর্থমন্ত্রী করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী নিজেই। ১৯৮৫ সালে প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হন মুখার্জি। ২০০০ সালে তাঁকে ফের এই পদ গ্রহণ করতে হয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন তিনি।
মনমোহন সিংহের দ্বিতীয় সরকারে প্রণব মুখার্জি পুনরায় অর্থমন্ত্রলয়ের দায়িত্ব পান। ২০০৯ সালের ৬ জুলাই তিনি সরকারের বার্ষিক বাজেট পেশ করেন। এই বাজেটে তিনি কয়েকটি কর সংস্কারের প্রস্তাব রাখেন। যেমন অস্বস্তিকর ফ্রিঞ্জ, বেনেফিট ট্যাক্স ও কমোডিটিজ ট্র্যানজাকশান ট্যাক্সের অবলোপন ইত্যাদি। এছাড়া তিনি ঘোষণা করেন যে অর্থমন্ত্রনালয় শীঘ্রই গুডস এ্যাÐ সার্ভিসেস ট্যাক্স নামে একটি কর চালু করবে। এই করের কাঠামোটির প্রশংসা করেন বিভিন্ন কর্পোরেট কর্মকর্তা ও অর্থনীতিবিদগণ। এছাড়াও তিনি কয়েকটি সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পে অর্থবরাদ্দ করেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ আইন, শিশুকন্যাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা ইত্যাদি। এছাড়াও অর্থবরাদ্দ করেন জাতীয় সড়ক উন্নয়ন কর্মসূচি, বিদ্যুতায়ন প্রকল্প এবং জওহরলাল নেহেরু জাতীয় নগরোন্নয়ন মিশনের মতো পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্পগুলিতেও।
তবে জীবনে তাঁর সবচেয়ে বড় অর্জন হলো ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়া। রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে আসা প্রণব বাবু নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দিল্লির রাইসিনা হিলের (ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন) মসনদে বসেছিলেন প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি হিসেবে। ২০১২ সালের ২৫ জুলাই আনুষ্ঠানিক ভিাবে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নন তিনি। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর সক্রিয় রাজনীতিতে প্রণব বাবুর ভ‚মিকায় ইতি পড়ে। ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই রাষ্ট্রপতির পদ থেকে তিনি অবসরে যান।
প্রণব মুখার্জি একাধিক সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৮৪ সালে যুক্তরাজ্যের ইউরোমানি পত্রিকার একটি সমীক্ষায় তাঁকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পাঁচ অর্থমন্ত্রীর মধ্যে অন্যতমের শিরোপা দেওয়া হয়। ২০১০ সালে বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের দৈনিক সংবাদপত্র এমার্জিং মার্কেটস তাঁকে ‘ফাইনান্স মিনিস্টার অফ দ্য ইয়ার ফর এশিয়া’ পুরস্কার দিয়েছিল। ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে, দ্য ব্যাঙ্কার পত্রিকা তাঁকে ‘ফাইনান্স মিনিস্টার অফ দ্য ইয়াস’ সম্মান দিয়েছিল। ভারত সরকার ২০০৮ সালে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মবিভ‚ষণ প্রদান করেছিল। ২০১১ সালে উলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় সাম্মানিক ডক্টর অফ লেটারস ডিগ্রি দেয়। ২০১২ সালের মার্চ মাসে অসম বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বেশ্বরায়া প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডি. লিট ডিগ্রি দেয়। ২০১৩ সালের ৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাম্মানিক ডক্টরেট অফ ল ডিগ্রি দেয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধু হিসেবে ২০১৩ সালের ৫ মার্চ প্রণব বাবুর হাতে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের তখনকার রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ মরিশাস বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডক্টর অফ ল সম্মান দেয়। তিনি ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার ভারতরতœ সম্মানে সম্মানিত হন। এছাড়া আইভোরি কোস্ট ও সাইপ্রাস থেকেও সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
৯ অগস্ট ২০২০ রাতে নিজের দিল্লির বাড়িতে শৌচাগারে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। পর দিন সকাল থেকে তাঁর ¯œায়ুঘটিত কিছু সমস্যা দেখা দেয়। বাম হাত নাড়াচাড়া করতে সমস্যা হচ্ছিল। ১০ আগস্ট দিল্লীর ক্যান্টনমেন্টের সেনা হাসপাতালে ভর্তি হন প্রণব মুখার্জি। অস্ত্রোপচার প্রয়োজন বলে জানান চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের আগে জানা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত। তারপরও অস্ত্রপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা ছিল সঙ্কটজনক। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। অবশেষে ৮৪ বছর বয়সে ৩১ আগস্ট ২০২০ তিনি জীবন যুদ্ধে হেরে যান।
তবে রাজনীতিক প্রণব মুখার্জি আলো ছড়াতে শুরু করেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে ভারতীয় পার্লামেন্টে তাঁর তৎপরতার মাধ্যমেই। কেউ কেউ বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধই বড় কারণ প্রণব বাবুর জাতীয় রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশে। ভারতের উন্নয়নের গতি প্রকৃতিতে তিনি এক অবিস্মরণীয় ছাপ রেখে গেছেন। একজন অসাধারণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, এক গৌরবময় রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতির সব মহল আর সমাজের সব শ্রেণিতে তিনি শ্রদ্ধা পেয়েছেন। সেকারনে অকৃত্রিম এই বন্ধুর অবদান বাংলাদেশের মানুষ চিরদিন গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণে রাখবে।