শাকিল আহমেদ, মঠবাড়িয়া : ছোট ছোট ভাই বোনদের মুখে দু’মুঠো ভাতের জোগান দিতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মঠবাড়িয়া পৌর শহরের বিভিন্ন অলি-গলিতে বাদাম বিক্রি করে শিশু হাসিব। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ৫ সদস্যের সংসারের হাল ধরতে হয়েছে শিশু হাসিবকে। তৃতীয় শ্রেণীতে কিছু দিন ক্লাস করার পর সংসারের অভাব অনটনের জন্য হাসিবের বেঁচে নিতে হয়েছে এ পেশা। দুই ভাই ও দুই বোনের সবার বড় হাসিব। হাসিব পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার গুদিঘাটা গ্রামের রুবেল খা’র জেষ্ঠ্য পুত্র। বেশ কিছু দিন ধরে হাসিবকে দেখা যায় শহরের বিভিন্ন অলি-গলিতে বাদাম বিক্রি করতে। হাসিব জানান, তার বাবা তিন বছর পূর্বে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছেন। এরপর হাসিব সহ তার অপর ছোট ছোট তিন ভাই-বোনকে নিয়ে বিপাকে পড়েন তার মা। এক পর্যায়ে হাসিবের মা তাদের নিয়ে উপজেলার উত্তর মিঠাখালী নানা বাড়িতে চলে যান। পরে শিশু সন্তানদের মুখে তিন বেলা দু’মুঠো ভাতের জোগান দিতে সে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ শুরু করেন। কিন্তু অন্যের বাড়ি ঝিয়ের কাজ করে ৫ সদস্যের সংসার পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তার মায়ের। মায়ের এমন দুর্দশা দেখে পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে পড়াশুনা ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে হাসিবকে। শিশু হাসিব উপজেলার পশ্চিম মিঠখালী নেছারিয়া-ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার (মোল্লা বাড়ির মাদ্রাসা) তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র। হাসিব জানান, বাদাম বিক্রি করে প্রতিদিন তিনি ভালো টাকা আয় করেন। এক প্যাকেট বাদাম বিক্রি করেন দশ টাকায়। এভাবে তিনি কোন দিন এক হাজার আবার কোন ৫-৭’শ টাকার বাদাম বিক্রি করেন। এতে করে তার অর্ধেক টাকা লাভ হয়। আর সেই কষ্টার্জিত টাকায় মা সহ ৯ বছরের ছোট ভাই বায়েজিদ, ৭ বছরের ছোট বোন তানহা ও ৩ বছরের অপর ছোট বোন হাবিবাকে নিয়ে অনেক সুখে শান্তিতে আছেন হাসিব। তবে হাসিবের দাবী সমাজের বিত্তবান অথবা সরকারি ভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা পেলে তিনি আবার সহপাঠীদের সাথে ক্লাসে ফিরে যাবেন।