এম সাইফুল ইসলাম
খুলনা রায়েরমহল এলাকা। টুটুল নগরের সুদৃশ্য গেট ও রাস্তা। পাশে-ই পেপসি গোডাউনের পর সুন্দরবন আবাসিকের অফিস।
এর-ই অদূরে ও রূপসা সেতু বাইপাস সড়কের বাপাশে ধুলোবালি এনে ফেলা হচ্ছে। এখান থেকে-ই মেশিনের মাধ্যমে বালু কেটে পাইপ দিয়ে সেই বালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভেতরের কৃষি জমি ভরাট করার জন্য।
এ কর্মকান্ডের কারণে সড়কের বা পাশে মাটি ভেঙ্গে পড়েছে। সড়ক ঘেঁষে তৈরি হয়েছে গভীর খাদ। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙ্গে পড়বে বাইপাস সড়কের ঐ অংশ।
এতে আশপাশের ফসলি জমি ও সড়ক ধসে পড়ার আশঙ্কা পড়ছে। ফলে এলাকার বাসিন্দারা হুমকির মধ্যে রয়েছে। রায়েরমহলে অভিযুক্ত শরিফকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
শুধু রায়েরমহল ই নয়। জেলার বটিয়াঘাটা ও পাইকগাছা উপজেলার সিমান্তবর্তী নদী থেকেও অবাধে চলে বালু উত্তোলন।
বটিয়াঘাটার স্থানীয় আকবার হোসেন (ছোট) নামের দালাল চক্রের সহযোগিতায় এই বালু সিন্ডিকেট গ্রুপ প্রশাসন ম্যানেজ করে তারা তাদের এই অবৈধ বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বালু সিন্ডিকেটের বেশকিছু সদস্যরা বলেন, আমরা প্রশাসন ম্যানেজ করেই নদী থেকে বালু উত্তোলন করে থাকি।
বটিয়াঘাটা উপজেলার গাওঘরা, সুরখালি, বারআড়িয়া, রায়পুর, সুন্দরমহল কাটা, কৈয়া বাজার, শৈলমারী, তেতুলতলা, পুটিমারি, বালিয়াডাঙ্গা, বিরাটসহ বেশকিছু জায়গায় সরকারি রাস্তার পাশে বালি উত্তোলন করছে।
রায়েরমহল এলাকার স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা শামীম হোসেন বলেন, কিছু অসাধু লোকের অবৈধ সুবিধা ভোগের কারণে এই সড়কের ক্ষতি কিছুতেই মেনে নেয়া যায়না। দ্রুত বালু ব্যবসায়ীদের এই অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধ করে সড়ককে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বটিয়াঘাটা বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের সদস্য লিটন বলেন, আমরা স্থানীয় জনৈক ছোটর মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে থাকি। শুধু তাই নয়,বালু উত্তোলনকারী ড্রেজার বোটের মালিক লিটন আরো বলেন, বিগরদানা ও স্থানীয় বারআড়িয়া পুলিশ ফাঁড়ি আমাদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নেয়।
এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও দেলুটি ইউনিয়নের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাম টিকাদার বলেন, সরকার বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করেছে। তারপরেও এই বালু সিন্ডিকেটরা প্রকাশ্য দিবালোকে ও রাতের আঁধারে প্রতিনিয়ত ভদ্রা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে চলেছে। ফলে এই বালু উত্তোলনের কারণে নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে প্রশাসনের প্রতি আহবান করব এই বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।
পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর খুলনাঞ্চলের সমন্বয়ক এ্যাড বাবুল হাওলাদার বলেন, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও যারা বালু উত্তোলন ও আইন প্রয়োগে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন, তারা সবাই আদালত অবমাননা করছেন।
খুলনা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো: মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান আমাদের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
বালু দস্যু: খুলনায় হুমকির মুখে পরিবেশ
Leave a comment