জন্মভূমি ডেস্ক : শেখ হাসিনার শেষ ১০ বছরে শুধু রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো পাচার করেছে প্রায় ১৪ লাখ কোটি টাকা, যা দিয়ে করা যেত চারটি মেট্রোরেল। এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মন্ত্রী এমপিরা। এমন ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে আসে অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে। শেখ হাসিনার দোসরদের ২৫টি এজেন্সি একচেটিয়া সিন্ডিকেট করে কর্মী পাঠাত বিদেশে। এই ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে বেশিরভাগ অর্থপাচারের অভিযোগ আসে সেই সময় থেকেই।
২০২২ সালে চার বছর বন্ধ থাকার পর শ্রমবাজারের দ্বার খুলে মালয়েশিয়া। ওইসময় ২৫টি এজেন্সির চূড়ান্ত তালিকা মালয়েশিয়াকে পাঠায় শেখ হাসিনার সরকার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এর নেপথ্যে ছিল মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আওয়ামী প্রভাব ও ঘুষ লেনদেন।
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য জনপ্রতি সরকারি ব্যয় খাতায় কলমে ৭৪৯৯০ টাকা থাকলেও প্রত্যেকের কাছ থেকে এজেন্সিগুলো নেয় গড়ে ৫৪৪০০০ টাকা। শুধু মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রেই এমন ঘটনা ঘটেনি। অন্যান্য দেশেও কর্মী পাঠাতে ঘটেছে এরকম ভয়ঙ্কর ঘটনা। এসব কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ফেনী থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্নিগ্ধা ওভারসিস লিমিটেড, ফেনী তিন আসনের সাবেক এমপি মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ফাইভ এম ইন্টারন্যাশনাল, ঢাকা-২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদের প্রতিষ্ঠান আহমেদ ইন্টারন্যাশনাল এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশ্মীরি কামালের অরবিটাল ইন্টারপ্রাইজ ও মেয়ে নাফিসা কামালের অরবিটাল ইন্টারন্যাশনাল এর নাম সহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান।
জীবনের উন্নতির তাগিদে লাখ লাখ দরিদ্র বিদেশগামীদের রক্ত চুষে এসব এজেন্সি মালিকরা হয়েছেন হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক।এজেন্সিগুলোর পাতানো সিন্ডিকেট এবং বিদেশে ভুয়া কর্মী নিয়োগের ফাঁদে পা দিয়ে ইতোমধ্যে ভিটেমাটি সহ সর্বস্ব হারিয়েছেন ভাগ্য বদলের জন্য হাজার হাজার অভিবাসন প্রার্থী। অবশেষে মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারেও ফের স্বপ্নের দ্বার উন্মোচন হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরে। নতুন করে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
নতুন বাংলাদেশের এমন শান্তিপূর্ণ উদ্যোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসরদের কালো ছায়া আর না পড়ুক- এমন দাবি বিদেশগামী লাখ লাখ তরুনের। একইসঙ্গে অভিযুক্ত এজন্সিগুলোকে আইনের আওতায়া আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিদেশগামীদের রক্ত চুষে এজেন্সি, পাঠানোর নামে ১৪ লাখ কোটি লোপাট
Leave a comment