শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা : ঘূর্ণিঝড় মিধিলির তাণ্ডবে বঙ্গোপসাগরে তিনটি ফিশিংবোট ডুবিতে ১১ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। প্রবল বৃষ্টিপাতে ভিজে নষ্ট ও সাগরে ভেসে গেছে দুবলারচরের জেলেদের প্রায় ২৫ কোটি টাকার মাছ। ব্যপক ক্ষতিতে জেলেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
দুবলার মাঝেরকেল্লা থেকে দুবলা ফিসারমেন গ্রুপের ব্যবস্থাপক মোঃ ফরিদ আহমেদ শিকদার শনিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে বলেন, মাঝেরকেল্লার মৎস্য ব্যবসায়ী চট্রগ্রামের বাশখালী উপজেলার মোজাফ্ফর বহদ্দারের মালিকানাধীন দুইটি ফিশিংবোট এফবি আল্লারদান ও এফবি ভাইভাই শুক্রবার ভোর রাতে ২৩ জন জেলেসহ পায়রা বন্দরের কাছে উত্তাল বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া ফিশিংবোটের ১২ জন জেলেকে মহিপুরের একটি ফিশিংবোট সাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে মহিপুরে নিয়ে গেছে বলে মোজাফ্ফর বহদ্দার জানিয়েছেন। নিখোঁজ ১১ জেলের বাড়ী চট্রগামের বাশখালী এলাকায়। এ ছাড়া ঝড়ে মান্দারবাড়ীয়ার কাছে সাগরে ডুবে গেছে আলোরকোলের জেলে রামপালের আঃ আউয়ালের মালিকানাধীন একটি ট্রলার। ডুবে যাওয়া এ ট্রলারের জেলেদের অন্য ট্রলারের জেলেরা উদ্ধার করে আলোরকোলে নিয়ে এসেছে।
দুবলার আলোরকোল থেকে রামপাল জেলে সমিতির সেক্রেটারী মোতাসিম ফরাজী জানান, ঘূর্ণীঝড় মিধিলির ঝড়োবাতাস ও প্রবল বৃষ্টিতে জেলেদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট এবং সাগরে ভেসে গেছে হাজার হাজার জেলের প্রায় ৩৫ হাজার টন মাছ যার বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ২৫ কোটি টাকা। এরুপ ক্ষতিতে আমরা এখন কি করবো সে চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি বলে জানালেন মোতাসিম ফরাজী।
দুবলা ফিসারমেন গ্রুপের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ শাহানুর রহমান শামিম বলেন, দুবলা অঞ্চলের আলোরকোল, নারিকেলবাড়ীয়া, মাঝেরকেল্লা ও শ্যালারচরে জেলেদের নিঃস্ব করে দিয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি। জেলেরা সহসাই এই আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেনা বলে শামিম জানান।
জেলেপল্লী দুবলা ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেষ্ট রেঞ্জার মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপক বৃষ্টিতে দুবলার আলোরকোল, নারিকেলবাড়ীয়া, মাঝেরকেল্লা ও শ্যালারচরের জেলেদের কোটি-কোটি টাকার মাছ বিনষ্ট হয়েছে। জেলেদের মাছ নষ্ট হওয়ায় বনবিভাগ প্রায় অর্ধ কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে বলে ঐ ফরেষ্ট রেঞ্জার জানিয়েছেন।