শহিদ জয়, যশোর : যশোরের বেনাপোলের চোরাচালানের গডফাদার ১৫ মামলার আসামি চোরাকারবারী যশোর সীমান্তের মাদক সম্রাট,বহুল আলোচিত বাদশাকে (৫৭)অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের সদস্যরা। গত বুধবার সন্ধ্যায় বেনাপোলের রঘুনাথপুর সীমান্তের বিভিন্ন কোদলারহাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় ।বাদশা মল্লিক ওরেফে বাদশা মিয়া বেনাপোল সীমান্তের বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত কেরামত মল্লিকের ছেলে। কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারী বাদশা মিয়া বর্তমানে বেনাপোলের দুর্গাপুরে বসবাস করে। যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি)এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী,এসপিসি, পিএসসি,আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে জানান,গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, কুখ্যাত মাদক সম্রাট বাদশা মিয়া রঘুনাথপুর সীমান্ত এলাকায় অবস্থায় করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে বিজিবির একটি বিশেষ দল অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় বাদশা মিয়াকে রঘুনাথপুর সীমান্ত এলাকা কোদলারহাট এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। কুখ্যাত বাদশা মিয়া দীর্ঘদিন ধরে যশোর সীমান্ত এলাকায় অস্ত্র ব্যবসা,স্বর্ণ চোরাকারবারি,মাদক, হুন্ডি ও ধুর পাচারকারীসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত এবং বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত । তার বিরুদ্ধে এ যাবৎ১৫ টির অধিক মামলার আসামী বাদশা মিয়া। তিনি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করেন এর আগে বিজিবি সদস্যরা বাদশা মিয়ার কাছ থেকে ১টি শ্যুটার গান, ৫ রাউন্ড গুলি ও ২৫৩ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করলেও অল্প কিছুদিনের মধ্যে আবার বেরিয়ে আসে। সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানী কার্মকান্ড পরিচালনায় মাফিয়া ডন খ্যাত বাদশা ভারতের বস গৌতম, রবিউল, আজার, নাসির, অপু সাহার সাথে রয়েছে তার নিবিড় যোগাযোগ। বাদশা মল্লিক,ওরেফে বাদশা মিয়া স্বর্ণ, ডলার, অস্ত্র ও ফেন্সিডিল ও গাঁজাসহসহ বিভিন্ন চোরাচালানীর সিন্ডিকেট গড়ে তুলে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবারাহ করে থাকে। একই ভাবে ভারতের সুধীর, সাক্ষাত ও কবির সিন্ডিকেটও কুখ্যাত বাদশার কাছে পাইকারী ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ অন্যান্য মাদক সরবরাহ করে থাকে।
৪৯ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করেন,বাদশা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বর্তমানে দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন অঞ্চলের শীর্ষ রাজনীতিক, দেশদ্রোহী, অর্থ-পাচারকারী সহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে জড়িত ব্যক্তি বা সন্ত্রাসীদের টাকার বিনিময়ে ভারতে পলায়নের সুযোগ করে দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিলো। এছাড়াও বর্তমানে শার্শা উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নাম ব্যবহার করে এসকল অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নামে তার আত্মীয়স্বজনও তার নেতৃত্বে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হয় বাদশা মিয়া। সে বাংলাদেশ এবং ভারতের নাগরিক হওয়ায় বাংলাদেশ প্রশাসনের চাপে পড়লে ভারতে পালিয়ে যায় আবার ভারতে চাপে পড়লে বাংলাদেশে চলে আসে। তাকে আটক করার পর সাধারণ জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মাদক চোরাচালান ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের এবং বাদশা চক্রের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে বাদশা মল্লিককে আটকের খবরে বেনাপোল এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বেরিয়ে আসছে নানান তথ্য । মাদক সম্রাট বাদশার বিরুদ্ধে সোনা-অস্ত্র-ফেন্সি-গাঁজা-হুন্ডি পাচার ও মাদকের ব্যবসা করে বাদশা হয়ে যায় আন্তঃদেশীয় মাদকপাচারকারীদের সর্দার। যার নামে দেশের বিভিন্ন থানায় রয়েছে অস্ত্র ও মাদকসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের অসংখ্য মামলা। তারপরও থেমে নেই বেপরোয়া বাদশা। সম্পতি তার সবচেয়ে বড় ব্যবসা হচ্ছে আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদের সীমান্ত পার করে ভারতে পাঠিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য বেনাপোলের সীমান্ত এলাকার কুখ্যাত মাদক সম্রাট বাদশার বিরুদ্ধে অত্র পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে যশোর ৪৯ বিজিবি সদস্যরা সীমন্ত এলাকায় ব্যাপক ব্যাপক অভিযান চালায় তাকে আটকের জন্য।