ভেড়ামারা প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসন (ইউএনও) ও অবৈধ ইট ভাটার মালিক পক্ষের মধ্যে গত ২দিন ধরে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। এই ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্ষন্ত ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে অবৈধ ৫টি ইট ভাটা বন্ধ করে দেয় এবং ২টি ইট ভাটার মালিককে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অপর দিকে মঙ্গলবার দুপুরে ভেড়ামারার স্থানীয় বাসষ্টান্ডে ইট ভাটার মালিক ও শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন।
ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসন ও ইট ভাটার মালিক সুত্রে জানা গেছে, মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এর রীট পিটিশন নং-১৩৭০৫/২০২২ এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯/০১/২০২৫ তারিখে প্রদত্ত আদেশ ও ২৪/০২/২০২৫ তারিখের নির্দেশনা অনুযায়ী এই ইট ভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এই আদেশের প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্ষন্ত ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হয়। এদের মধ্যে ৫টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয। ইটভাটার মূল ফটোকে বন্ধের ব্যানার টাঙিয়ে সিলগালা করেন কেএমবি ব্রিকস বার মাইল, এএন্ডএইচ ব্রিকস হাওয়াখালী, এনএসবি ব্রিকস হাওয়াখালী, এএমবি ব্রিকস বারমাইল ও এজিএম ব্রিকস বারমাইল। দুইটি ইট ভাটার মালিককে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তারা হলেন মান্নান মন্ডল ব্রিকস কে ১ এক লক্ষ টাকা ও আইএমআর ব্রিকস কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে ভেড়ামারার স্থানীয় বাসষ্টান্ডে ইট ভাটা মালিক ও শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন। ভেড়ামারা উপজেলার ইট প্রস্তুত মালিক ও শ্রমিকবৃন্দ চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে ইট প্রস্তুত করার জন্য শ্রমিকদের অগ্রিম টাকাসহ ট্রেড লাইসেন্স, বাণিজ্যিক কর, আয়কর ও ভ্যাট পরিশোধ করে আসছি। ভেড়ামারা উপজেলায় ৪৪টি ইটভাটায় প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। তাদের আয়ে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। বিগত শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দেশীয় শিল্প ধ্বংস করার যড়যন্ত্রে লিপ্তে থাকা ২০১৩ ও ২০১৯ সালের কালো আইন করে এই শিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছিল। এমতাবস্থায় ইটভাটা বন্ধ হলে ইটভাটা মালিকগণ ব্যাংকের ঋণসহ অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হবে অন্যদিকে শ্রমিকগণ পবিত্র মাহে রমজান মাসে অভাব অনটনে পরিবার-পরিজন নিয়ে অসহায়ভাবে জীবন যাপন করবে। আইন অনুযায়ী ইটভাটা বন্ধ করা হলে দেশে সরকারি, বেসরকারি সকল উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। একই সাথে দেশের অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এছাড়াও দেশে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অপরাধ বেড়ে যাবে। ২ মাসের সময় চেয়েছি। এর মধ্যে প্রশাসন যদি কোন ইট ভাটায় অভিযান চালিয়ে ক্ষতি করে তাহলে আমরা ইটভাটা মালিকরা শ্রমিকদের সঙ্গে করে আন্দোলন ঘোষণা দেবো।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন ভেড়ামারা উপজেলা ৪৪টি ইটভাটা রয়েছে। এদের মধ্যে ৩০ টি ইটভাটা মহামান্য হাইকোর্টের রিটপিটিশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ৩টি ভাটার লাইসেন্স আছে। ১১টি ইট ভাটার কোন কাগজপত্র নেই তার মধ্যে ৫টি ইটভাটাকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২ টি ইট ভাটাকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।। আগামীতে অভিযানে বাকি অবৈধ ইটভাটা গুলোকে বন্ধ করা হবে। এই অভিযান চলমান থাকবে।
ভেড়ামারা উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি নাজিমুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক কালাম মন্ডল বলেন, ভেড়ামারা উপজেলার ইট প্রস্তুত মালিক ইট প্রস্তুত করার জন্য শ্রমিকদের অগ্রিম টাকাসহ ট্রেড লাইসেন্স, বাণিজ্যিক কর, আয়কর ও ভ্যাট পরিশোধ করে আসছি। ভেড়ামারা উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। বিগত শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দেশীয় শিল্প ধ্বংস করার যড়যন্ত্রে লিপ্তে থাকা কালো আইন করে এই শিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছিল। আমরা ২ মাসের সময় চেয়েছি। এর মধ্যে প্রশাসন যদি কোন ইট ভাটায় অভিযান চালিয়ে ক্ষতি করে তাহলে আমরা ইটভাটা মালিকরা শ্রমিকদের সঙ্গে করে আন্দোলন ঘোষণা দেবো।
ভেড়ামারা প্রশাসন ও অবৈধ ইট ভাটা মালিক পক্ষের মুখোমুখিতে উত্তেজনা

Leave a comment