মাদারীপুর অফিস : মাদারীপুরে দরপত্র ছাড়াই পানির দওে মাত্র ৭ লাখ টাকায় একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৮০টি সরকারি বসতঘর বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ তিন প্রভাবশালীর চাপে ঘরগুলো বিক্রি করতে বাধ্য হন হতদরিদ্র আশ্রয়হীন অসহায় মানুষগুলো। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ঘরগুলো ক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ইউপি সদস্য। আর ঘর বিক্রির কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করে উপজেলা প্রশাসন বলছে, লিখিত অভিযোগ পেলে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা। মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে, ২০০১ সালে হতদরিদ্রদের জন্য মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুরে একটি গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করে সরকার। লোহার অ্যাঙ্গেলের কাঠামোর ওপর টিনের ছাউনি ও বেড়া দিয়ে তৈরি করা হয় ঘরগুলো। চারপাশের ভিত্তি পাকা থাকলেও মেঝে ছিল মাটির। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাই সেখানে নতুন করে ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। নতুন ঘর নির্মাণ কার্যক্রম শুরুও হয়েছে। এই সুযোগে অসহায় মানুষদের চাপ প্রয়োগ করে পানির দরে ঘরগুলো বিক্রি করতে বাধ্য করেন খোঁয়াজপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নজরুল সরদার ও তার সহযোগী আজিজুল আকন ও জাকির হোসেন নামে প্রভাবশালী তিন ব্যক্তি। ৪০টি ঘর বিক্রি করা হয় মাত্র তিন লাখ টাকায়। এর আগে প্রথম দফায় সরিয়ে নেওয়া হয় ৪০ টি ঘর। তখন ৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল বাসিন্দাদের। প্রথম দফায় যেঘরগুলো বিক্রয় করা হয়েছিল সেখানে ইতোমধ্যেই নির্মাণ করা হয়েছে পাকা ভবন। বিক্রি হওয়া ঘরগুলো থেকে প্রতি ঘরের পরিবার হিসেবে বাসিন্দাদের দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩৭৫০ টাকা। সোমবার সকালে ঘরগুলো অপসারণের কার্যক্রম শুরু হলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। অন্যত্র ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন তারা। এ ব্যাপারে মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছেন অসহায় মানুষেরা। তবে বাসিন্দারা বলছেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। পুরান ঘরের জায়গায় নতুন পাকা ঘর হবে সেটাতেই আমরা খুশি। তারপরও মেম্বারের কাছ থেকে ঘর বাবদ ৩৭৫০ টাকা পেয়েছি। ঘর ক্রয়ের বিষয় স্বীকার করেছেন অভিযুক্তদের একজন স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল সরদার। তার দাবি করে বলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ও ঘরগুলোর বাসিন্দাদের সম্মতিতেই তিনি ঘর কিনে অপসারণ প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ঘরগুলোর বিশ বছরের বেশি পুরনো। এসব ঘর ভেঙ্গে আমার ভাঙারি হিসেবে বিক্রি করতে হবে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^াস দিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব। তিনি বলেন, ঘরগুলো কোন ভাবেই বিক্রি করার কথা নয়। আমি আপনাদের কাছ থেকে শুনেছি। এই বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।