
জন্মভূমি রিপোর্ট : গ্রামের অতি দারিদ্র্য পরিবারের গৃহবধু হয়েও সংসার চালানোর পাশাপাশি মানব সেবা করে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বটিয়াঘাটার পুটিমারী গ্রামের ইতিমা মল্লিক। অসহায় মানুষদের পাশে থেকে তিনি হয়ে উঠেছেন সত্যিকারের অপরাজিতা। এই প্রতিবেদনে থাকছে দারিদ্য জয় করে টিকে থাকা একজন নারীর গল্প।
ইতিমা মল্লিক জলমা ইউনিয়নের পুটিমারী গ্রামের ধীমান মল্লিকের স্ত্রী। চরম অভাবের মধ্যেও তিনি দু’টি সন্তানকে সুশিক্ষিত করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার অসহায় নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করে সুপরিচিতি পেয়েছেন। ঐ সময় তিনি রূপান্তর পরিচালিত অপরাজিতা প্রকল্পের কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হয়ে চিরাচরিত ধারনা বদলে ফেলেন। তখন রূপান্তর সুইজারল্যান্ডের আর্থিক সহযোগিতা ও হেলভেটাস ইন্টার কোঅপারেশনের নেতৃত্বে মাঠপর্যায়ে অপরাজিতাঃ নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করে। এই প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে অপরাজিতা নেটওয়ার্ক গঠন করা হয়। ইতিমা মল্লিক রূপান্তরের অপরাজিতা প্রকল্পের মাধ্যমে জলমা ইউনিয়নের অপরাজিতা ইউনিয়ন নেটওয়ার্ক কমিটির সাথে যুক্ত হন। এর মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে মতবিনিময় সভা ও সম্ভাব্য নারী প্রার্থীদের নির্বাচন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহন করেন। ইতিমা মল্লিক ইউনিয়ন পরিষদের সমন্বয় কমিটির সঙ্গে যুক্ত হন এবং কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়। করোনাকালীন সময়ে তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে মানুষকে মাস্ক, সেনিটেসন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেচলার পরামর্শ দিতেন। এমনকি করোনা পজেটিভ রোগীদের চিকিৎসা প্রদানে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তার এই সেবামূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বর্তমানে তিনি নগরীর লবণচোরা থানার পুলিশিং কমিটির মহিলা সম্পাদিকা নর্বাচিত হয়েছেন। প্রায় প্রতিদিন বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন এবং গর্ভবতী নারীদের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে কাজ করেন। শীতের সময় অসহায় নারীদের শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। এই সেবা কর্মের মধ্যদিয়ে ইতিমা মল্লিক হয়ে উঠেছেন সত্যিকারের অপরাজিতা।