জন্মভূমি ডেস্ক : কৃষিনির্ভর মেহেরপুর জেলার মাঠজুড়ে এখন রোপা আমনের সবুজে সয়লাব। চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৩ লাখ মন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২৬ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে।
মাঠের যেদিকেই চোখ মেলে দেখা যায় আমন ধানের সবুজ ঢেউ। যা দেখে আমন ধানচাষিদের প্রাণেও আনন্দের ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে। আর মাত্র দিন দশেক প্রতীক্ষা, প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা নিশ্চিত।
সরেজমিনে দেখা যায়, যারা একটু আগাম আমন ধান চাষ করেছেন তাদের ধানে পাক ধরেছে। দু‘একজন চাষি ধান ঘরেও তুলেছে। ৯৫ ভাগ ধানগাছ বুকে থোড় নিয়ে মাটির জমিনে দাঁড়িয়ে আছে। যা ভরে উঠবে কৃষাকের শূন্য গোলা। আমন মৌসুমকে ঘিরেই এমন স্বপ্ন দেখছে এ অঞ্চলের চাষিরা। কৃষি বিভাগের দাবি, অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথা সময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে এবার আমন চাষের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
মেহেরপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ৩টি উপজেলায় ২৬ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে। প্রকৃতি আমন চাষের অনুকূলে থাকায় মাঠময় সোনালি ধানের তরতাজা গাছ দেখে গাছ দেখলে জান প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে কৃষকের। সবুজে-সবুজে ঘেরা আমনের মাঠ দেখে বারবার ফিরে তাকায় কৃষক, থমকে দাঁড়াতে হচ্ছে পথিককে।
দেখা যায়, আমন ধানের ক্ষেত প্রকৃতির খেয়ালে গাঢ় সবুজ রঙ ধারণ করেছে। ধানগাছ ভাল রাখতে ও ধানের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকরা ক্ষেতের ঘাস পরিষ্কার, সার ও বালাইনাশক ওষুধ প্রয়োগ ও পার্চিংসহ সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করছেন। কৃষকরা জানান, এবছর আবহাওয়া অনেক ভালো। সময়মতো বৃষ্টি হয়েছে। রোদও পাওয়া গেছে। তাই ধানের ফলন ভালো হবে। কোনো ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে বিগত বছরের তুলনায় এবার তারা ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারবেন। সরকার যদি ন্যায্যমূল্য দেয় তাহলে লাভবান হবেন তারা।
সদর উপজেলার সিমান্তবর্তী শালীকা গ্রামের বয়োবৃদ্ধ চাষি রবকুল হোসেন জানান, বর্তমানে শ্রমিকসহ ধান চাষে সব উপকরণের দাম বেড়েছে। ধানের সঠিক মূল্য পাওয়ার আশায় চাষ করেছি। আশা করি সরকার এবার আমাদের দিকে একটু নজর দিবেন।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, প্রাকৃতিক বৈরিতার কবলে না পড়লে এবং ঠিকমতো সোনালী ধান ঘরে তুলতে পারলে লাভবান হবে কৃষকরা। তাইতো নতুন ধানে সোনালী স্বপ্ন বুনছেন উপজেলার কৃষকরা।
জেলা খামার বাড়ির উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, ফলন যাতে ভালো হয়, এই জন্য মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন। কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। এই কর্মকর্তা আশা করছেন এবার মেহেরপুর জেলায় ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৩২ টন (৩৩ লাখ মন) ধান উৎপাদন হবে।