
মো.জামাল শরীফ, মোড়েলগঞ্জ প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে প্রভাবশালী মহলের রোষানলে পড়েছে একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। জিউধরা ইউনিয়নের ঠাকুরাইনতলা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সেকেন্দার আলী হাওলাদারের মৎস্যঘেরের প্রজেক্টে হামলা করেছে প্রতিপক্ষের লোকেরা। ফলে তার প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সেকেন্দার আলী হাওলাদার বাদি হয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলেও অভিযোগ দায়ের করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগ ও সরেজমিনে জানা গেছে, ঠাকুরাইনতলা গ্রামের বাসিন্দা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, তৎকালীন জাতীয় রক্ষী বাহিনীর সদস্য মো. সেকেন্দার আলী হাওলাদার (৭৮) পৈত্রিক সূত্রে ৩০ বিঘা জমিতে মৎস্য ঘের করে আসছেন। বর্তমানে সেখানে মৎস্য প্রজেক্ট করে বাগদা গলদা, সাদা মাছের চাষ করছেন। পাশাপাশি কয়েক লাখ টাকা ব্যায়ে সবজি ও নানা ধরনের ফসল উৎপাদন করছেন। পূর্ব পুরুষদেও সূত্র ধরে প্রায় ১শ বছর এই জমি সেকান্দার আলীর দখলে।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই এলাকার প্রভাবশালী মোক্তারুজ্জামান খানের নেতৃত্বে ৮/১০ জনের একটি দল মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলীর মৎস্য প্রজেক্টে গত মঙ্গলবার(৩ আগষ্ট) সকালে হামলা চালিয়ে তার কাটা ও ঘেরা বেড়া ভাংচুর করে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা ঘের থেকে মাছ লুট কওে নিয়ে যায়। এ সময় হামলাকারিরা বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাকে অশ্লীন ভাষায় গালমন্দ করে এবং মারপিটের জন্য ধাওয়া করে।
মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলীর ছেলে প্রধান শিক্ষক নাসির হাওলাদার, হারুন অর রশীদ ও মো. আলী হায়দার বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা বিরোধী প্রজন্মরা এখনও জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের ওপরে নির্যাতন করছে। এ দু:খ রাখবো কোথায়? ২০০১ সালে একই চক্র তাদের জমিদখল করে নেয়। ২০১৬ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিলে মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী ফিরে পান তার পৈত্রিক সম্পত্তি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহম্মেদ, সাবেক ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান হাওলাদার, কৃষক মজিবর শরীফ, বেলায়েত হোসেন হাওলাদারসহ স্থানীয়রা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী মৎস্যঘেরে হামলার ঘটনা দু:খজনক। যারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের বিচারের দাবি জানান তারা।
তবে, মোক্তারুজ্জামান খান এ সব অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি সঠিক নয়। এসবের কোন ভিত্তি নেই। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার সেকান্দার আলীর অভিযোগ পেয়েছি। এবিষয়ে থানার ওসির সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলীর অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।