রামপাল প্রতিনিধি: বাগেরহাটের রামপালে সুদের টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে ভর্ৎসনা করায় গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে রাজকুমার বিশ্বাস (৬০) তিনি উপজেলার গৌরম্ভা এলাকার জিতেন বিশ্বাসের ছেলে। লাশের সুরতহাল করার সময় মৃতের পকেট থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ। যাতে লেখা ছিল- তুহিন ও মিলন আমাকে বাঁচতে দিল না, তুহিন আমাকে লোকজনের মধ্যে গালিগালাজ করে, তাই আমি এই পথ বেছে নিয়েছি”। শুক্রবার (১৯ মে) ভোরে মৃতের স্ত্রী অঞ্জনা বিশ্বাস বাড়ির পাশে কাঁঠাল গাছের ডালের সাথে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার স্বামীর লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মৃতের জামাই উত্তম কুমার সরকার বাদী হয়ে গৌরম্ভা এলাকার হারান চন্দ্র রায়ের ছেলে তুহিন রায় (৫০) এবং অজিত অধিকারীর ছেলে মিলন অধিকারী (৪৫) সহ আরো২/৩ জনকে আসামি করে আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে রামপাল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং ১১( তারিখ ১৯/০৫/২৩ )রামপাল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাধেশ্যাম সরকারের নেতৃত্বে একটি দল শনিবার রাত পৌনে তিনটার দিকে খুলনা লবনচরা এলাকার জিন্নাহপাড়ার ৫নং গলিতে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি তুহিন রায়কে গ্রেফতার করে। স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, রাজকুমার একজন ঘের ব্যবসায়ী। সে ঋণগ্রস্থ ছিল। আসামিদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণগ্রহণ করে দীর্ঘদিন ধরে সুদ পরিশোধ করলেও মূল টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আসামীগন মূল টাকা ফেরত পাওয়া জন্য বিভিন্ন সময় মানুষিক ভাবে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকও হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৮ মে বিকেলে গৌরম্ভা বাজারের মাছের চান্দির সামনে আসামীগণ টাকার জন্য রাজকুমারকে বিভিন্ন চাপ ও গালিগালাজ করেন। আর সেই কষ্টেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় রাজকুমার। মৃত্যুর আগে বুক পকেটে লিখে রেখে যায় একটি চিরকুট। যাতে লেখা রয়েছে- তুহিন ও মিলন আমাকে বাঁচতে দিল না, তুহিন আমাকে অনেক গালিগালাজ করে, তাই আমি এই পথ বেছে নিয়েছি”। রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস, এম, আশরাফুল আলম জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য চম্পক কুমার কুন্ডু মোবাইল ফোনে রামপাল থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। পুলিশ উপস্থিত হয়ে লাশের সুরতহাল করে। এ ঘটনায় রামপাল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান আসামী তুহিন রায়কে গতরাতে খুলনা থেকে আটক করেছে পুলিশ। আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।