জন্মভূমি ডেস্ক : রাজধানী ঢাকায় শুধু বড়লোকেরাই নয়, স্বল্প আয়ের মানুষ ও দিনমজুরেরাও ফ্ল্যাটে থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার সেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করাই তার সরকারের মূল লক্ষ্য।
শনিবার (২৫ মে) সকালে রাজধানীতে কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এদিন রাজধানীর বঙ্গবাজারে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সরকারপ্রধান।
ঢাকায় কোনো বস্তিবাসী অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকবে না জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, সুন্দর পরিবেশে সবাই বসবাস করবে। সেই ব্যবস্থা করে দেব। এই পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। মানুষের কল্যাণে কাজ করা, এটাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি। বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দিচ্ছি। যে বস্তিতে যেরকম ভাড়া সেরকম ভাড়াই দেবে। কিন্তু তারা ফ্ল্যাটে থাকবে। শুধু বড়লোকেরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না, আমাদের রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিন মজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। স্বল্প ভাড়া, কেউ যদি প্রতিদিন ভাড়া দিতে চায়, সেই ব্যবস্থা আছে। কেউ যদি সাত দিনের ভাড়া দিতে চায়, সে ব্যবস্থা আছে। কেউ মাসের ভাড়া দিতে চাইলে সে ব্যবস্থাও হবে। আমরা এরইমধ্যে ৩০০ পরিবার তুলেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকাকে আধুনিক হিসেবে গড়ে তুলতে একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে আওয়ামী লীগ সরকার। বিভিন্ন সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পানি ব্যবহারে যাতে অপচয় না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জলাশয় ভরাট করা যাবে না। প্রকৌশলী-স্থপতিরা পুকুর দেখলেই কেন দালান তৈরির পরিকল্পনা করেন? জলধার সংরক্ষণ করুন৷ যাদের এক টুকরো জমি আছে তারা কমপক্ষে একটা ফলের গাছ লাগান, একটা ফুলের গাছ হলেও লাগান। যাদের গ্রামের বাড়ি আছে, সেখানে যেন অনাবাদি জমি না থাকে, সেই দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
পার্কগুলো যাতে মাদকসেবীদের আখড়া না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, মাদক থেকে দূরে থাকবেন সবাই৷ তিনি বলেন, আমাদের যুব সমাজকে লেখাপড়া করতে হবে। মাদক, নেশা, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। একটা মাদকাসক্ত সন্তান যদি থাকে তাহলে সেই পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। তোমরা বাবা-মাকে কষ্ট দাও কেন? নিজেকে কষ্ট দাও কেন? যারা মাদক সেবন করে তারা পরবর্তীতে নিজেরাই অসুস্থ হয়ে যায়। নিজেদের ঘর সংসার হয় না, কিছু হয় না। জনগণকে একটা সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।
আসন্ন ঈদুল আজহায় যেখানে সেখানে পশু কোরবানি না করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত্রতত্র পশু কোরবানি দেবেন না৷ নির্দিষ্টস্থানে কোরবানি দেবেন৷ আগামীতে পশু কোরবানির জন্য আরও আধুনিক ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে সিটি করপোরেশনগুলোতে। শুধু সিটি করপোরেশন নয়, দেশব্যাপী আধুনিক ব্যবস্থা রাখতে হবে সেই নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। যেন শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম।