স্নাতক আট জন ও স্নাতকোত্তর দুই জন, এক-তৃতীয়াংশের বেশি গৃহিণী, মামলার আসামিও রয়েছে
এম সাইফুল ইসলাম : কেসিসি নির্বাচনে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে শিক্ষিতদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। এ বছর প্রার্থী হওয়া নারীদের এক-চতুর্থাংশের বেশি উচ্চশিক্ষিত।
সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মোছা হোসনেয়ারার বিরুদ্ধে ২০২২ সালে হওয়া দুটি মামলা চলমান। ২০১১ ও ২০২০ সালে হওয়া তিনটি মামলা থেকে তিনি খারিজ পেয়েছেন। সংরক্ষিত ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শেখ আমেনা হালিমের ২০০৬ ও ২০০৮ সালে দুটি মামলা থাকলেও সেগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।
হলফনামা সূত্রে জানা যায়, এবারের নির্বাচনে ৩৯ জন নারী সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৪৪ জন নারী প্রার্থীর আবেদনে বৈধতা পেলেও শেষপর্যন্ত ৩৯ জন নারী সংরক্ষিত আসনে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন। ২০১৩ সালে নারী প্রার্থী ছিলেন ৪৮ জন। সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৬ শতাংশ গৃহিণী, অন্যরা ব্যবসাসহ নানায় পেশায় আছেন।
এবারের নির্বাচনে সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া প্রার্থীর মধ্যে আটজন স্নাতক এবং দুজন স্নাতকোত্তর পাস প্রার্থী আছেন। স্নাতক পাস প্রার্থীদের মধ্যে চারজন নিয়েছেন এলএলবি ডিগ্রি। দুজন নারী প্রার্থী প্রকৌশল বিদ্যায় ডিপ্লোমাধারী। স্নাতকের নিচের সব শিক্ষাসূচকে এবার নারী প্রার্থীদের অবস্থান গত বছরের চেয়ে ভালো। তবে গতবারের চেয়ে এ বছর স্নাতকোত্তর পাস প্রার্থীর সংখ্যা একজন কম। ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে আটজন স্নাতক এবং তিনজন স্নাতকোত্তর পাস প্রার্থী ছিলেন। ২০১৩ সালে নয়জন স্নাতক ও দুজন স্নাতকোত্তর পাস নারী প্রার্থী ছিলেন।
এবারসহ আগের দুটো সিটি নির্বাচনের সংরক্ষিত নারী প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে পঞ্চম থেকে এসএসসির কম শিক্ষাগত যোগ্যতার নারী প্রার্থী ছিলেন ২২ জন। ২০১৮ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় ১৬ জনে। এ বছর এসএসসির কম শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রার্থীর সংখ্যা ইতিবাচকভাবে কমে হয়েছে ৯ জন।
এদিকে এবার এসএসসি পাস নারী প্রার্থী আছেন সাতজন। গত সিটি নির্বাচনে এসএসসি পাস ছিলেন ছয়জন। এবার এইচএসসি পাস আছেন সাতজন, গতবার ছিলেন তিনজন। এবার সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন নারী প্রার্থীর সংখ্যা তিনজন; গতবার সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন নারী প্রার্থী ছিলেন ছয়জন। এছাড়া এবারের নির্বাচনে সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোনো প্রার্থীই মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করেননি।
প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামা সুত্রে জানা যায়, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের খাদিজা আক্তার এমএ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নূপুর দাস এমবিএ ডিগ্রিধারী। এছাড়া নগরীর প্রাণকেন্দ্রের ৮ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের তিন প্রার্থী স্নাতক সম্পন্ন। তারা হলেন, বর্তমান কাউন্সিলর কণিকা সাহা, হালিমা ইসলাম ও সুমা আক্তার।
অন্য প্রার্থীরা হলেন ১ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মনিরা আক্তার, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মেমরী সুফিয়া রহমান, সংরক্ষিত ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শেখ আমেনা হালিম, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের লাকী আক্তার ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী জেসমিন পারভীন জলি।
এবারের ১০টি সংরক্ষিত আসনের ৩৯ নারী প্রার্থীর এক-তৃতীয়াংশের বেশি গৃহিণী। তবে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেড়েছে। গতবার সাতজন প্রার্থীর পেশা ছিল ব্যবসা। এবার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদারি, গাড়ির বডি তৈরির ব্যবসা, ওষুধের ব্যবসা, রাখি মালের (পণ্য মজুত) ব্যবসা, ডেইরি ফার্ম, বুটিকস থেকে শুর” করে শিক্ষকতা, দরজি পেশার প্রার্থীরাও নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছেন।
প্রার্থীদের মধ্যে ১৪ জন গৃহিণী, একজন ঠিকাদার, ১২ জন প্রার্থীর পেশা ব্যবসা ও ক্ষুদ্র ব্যবসা, তিনজন করে আইনজীবী ও দরজি এবং একজন করে শিক্ষকতা ও সমাজসেবাকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন। অন্যরা তাঁদের হলফনামায় পেশা উল্লেখ করেননি।
নারী প্রার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগেরই অস্থাবর সম্পদ এক থেকে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে। বেশির ভাগেরই ৩ থেকে ২০ ভরি পর্যন্ত সোনা আছে। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুজন প্রার্থীর ব্যাংকে সাড়ে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণ আছে।