সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : সাতক্ষীরা সাত উপজেলায়ফাগুনের সবুজ জুড়ে যেন সবুজের হাতছানি। সারি সারি লিচু গাছ রাস্তার দু’পাশের। গাছের পাতার ফাঁকে দোয়েল-শালিক-চড়ুইসহ বিচিত্র সব পাখ-পাখালির কলতান। ফাল্গুনের শুরুতে সবুজ পাতার মাঝে সবুজ ডগায় নাক ফুলের মতো লিচুর মুকুল আসতে শুরু করেছে। এতে প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সাজে। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুগ্ধ হয়ে উঠছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকা।
বাগান চাষিরা গাছের পরিচর্যা করতে মেতে উঠেছেন। কেউ সেচ দিয়েছেন, কেউবা সেচ দেওয়ার অপেক্ষা করছেন। ভালো ফলনের আশায় বাগানসহ বসতবাড়িতে থাকা লিচু বাগানের গাছের পরিচর্যা শুরু হয়েছে। সাধারণত মাঘের শেষ সপ্তাহ থেকে ফাল্গুনের মাঝামাঝি লিচু গাছে মুকুল আসে। তবে এবার মুকুলের বদলে অধিকাংশ গাছে নতুন পাতা বের হয়েছে।
চাষিরা বলছেন, নতুন পাতা বের হওয়া গাছে মুকুল আসার সম্ভাবনা কম। ফলে গতবারের তুলনায় লিচুর ফলন কম হবে এমনটাই আশঙ্কা করছেন।
জানা গেছে, সোনারগাঁয়ে সাধারণত তিন প্রজাতির লিচুর ফলন হয়ে থাকে। এগুলো হলো-পাতি লিচু, কদমী লিচু ও চায়না থ্রি লিচু। তবে এর মধ্যে পাতি লিচুর চাষই সবচেয়ে বেশি হয়। এ ছাড়া কদমী চাষ করছে অনেকেই। বাংলাদেশের অনেক জেলায় লিচুর বাম্পার ফলন হলেও আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্যের কারণে সাতক্ষীরার লিচু আগে পেকে থাকে। যে কারণে সাতক্ষীরার লিচু প্রতি বছরের মে মাসের প্রথমদিকেই বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যান লিচু চাষিরা।
সাতক্ষীরায় যে সমস্ত এলাকায় লিচু বাগান আছে সাতক্ষীরা সদরের ইটেগাছা মজিদপুর আগডবাড়ি রসুলপুর কদমতলা কাটিয়া এছাড়া কলরব উপজেলায় ১৫টি লেছুর বাগান রয়েছে তালা উপজেলায় এগারোটিলে চুল বাগান রয়েছে দেওয়াটা উপজেলায় ছয়টি লিচুর বাগান রয়েছে কালীগঞ্জ উপজেলায় এগারোটি লিছুর বাগান রয়েছে শ্যামনগর উপজেলায় নয়টি ইলিশের বাগান রয়েছে আশাশুনিয়া উপজেলায় চারটি লিছুর বাগান রয়েছে,
সরেজমিনে সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বাগানগুলোতে লিচুর মুকুল আসার আগে থেকে লিচু চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। মুকুল আসার পরে অনেকটাই ব্যস্ত পরিচর্যা করতে। বৈরী আবহাওয়া সৃষ্টি না হলে লিচুর ফলন ভালো হবে। মুকুল এসে যেন ঝরে না পড়ে। যে কারণে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত দেব হাটা উপজেলারবাড়ির আঙিনায় লাগানো গাছ মালিক আরমান হোসেন জানান, ইতোমধ্যেই আমার লাগানো লিচু গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আমার দুই তিনটা লিচু গাছে এখনো মুকুল আসেনাই গাছে নতুন পাতা বাহির হচ্ছে তবে গতবছরের তুলনায় এবার গাছে মুকুল আসায় ফলন কম হবে।
সাতক্ষীরা সদরেরবাগান মালিক আরিফ হোসেন বলেন, আমার বাগানে এ বছর চায়না-থ্রি, পাতি জাতের লিচু গাছ ভরে উঠেছে মুকুলে। শখ করে আমি আমার পুকুর পাড়ে কিছু লিচু গাছ লাগিয়ে ছিলাম। তা থেকে লিচু মৌসুমে একটি মোটা অংকের টাকা আয় করি। আমার গাছের মুকুল দেখেই মনে হয় এবারও আমি লাভবান হবো। এবার আবহাওয়া অনূকুলে থাকলে গতবারের চেয়ে লিচুর ভালো ফলন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সাতক্ষীরালিচু ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, গতবছর লিচু বাগান কিনেছিলাম ৩০ একর। বাগানের প্রায় সব গাছে মুকুল এসেছিল। ফলনও ভালো ছিল লিচু বিক্রয় করে ভালো লাভ হয়েছিল। এবার তাড়াতাড়ি সবুজ ও তামাটে পাতা ছেড়ে দিয়েছে গাছগুলো। কিছু ডালে মুকুল আছে, তবে পাতার আধিক্যই বেশি। যদিও মুকুল আসার সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়নি। আশা করি ভালো ফলন হবে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানান সাতক্ষীরায় আগাম লিচুর বেশ সম্ভাবনা রয়েছে ৷ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাতক্ষীরায় ১০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান আছে৷ লিচু উৎপাদনের মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১২ মেট্রিক টন।
তিনি আরো বলেন, অসময়ে বৃষ্টির কারনে মুকুলের বদলে অধিকাংশ গাছে নতুন পাতা বের হয়েছে। চাষীরা লিচু বাগানে সাথী ফসল হিসেবে সবজি চাষ করায় জমিতে সেচ দিয়েছে যার কারনে কিছু কিছু গাছে মুকুলের বদলে নতুন পাতা চলে এসেছে৷ তবে এই দৃশ্য তুলনামুলকভাবে অনেক কম হওয়ায় লিচুর ফলন পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় তেমন তারতম্য হবেনা। লিচু আবাদকৃত ইউনিয়নগুলোতে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করছে।