জন্মভূমি রিপোর্ট
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে অগ্নিকান্ডে অন্যের জীবন বাচাতে গিয়ে নিজের জীবন হারিয়েছেন খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার শাকিল তরফদার। তিনি ফায়ার ফাইটার পদে চট্রগ্রামে কর্তব্যরত ছিলেন। ড্রাম ভর্তি কেমিক্যাল থাকার বিষয়টি ডিপো কর্তৃপক্ষ গোপন করায় শাকিল সহ প্রাণ যায় আরও ১০ জন ফায়ার ফাইটারের।
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার (৪ জুন) রাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে কর্মরত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মারা যান শাকিল হোসন। তারপর থেকেই দীর্ঘ সময় নিখোঁজ হন তিনি। একপর্যায়ে মারা যান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শাকিলের গ্রামের বাড়ি খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুকদাড়া গ্রামে। তিনি সুকদাড়া এলাকার সাত্তার তরফদারের ছেলে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান শাকিল তরফদার তিন বছর পূর্বে চাকুরিতে যোগদান করেন। তার বাবা সাত্তার তরফদার একজন সামন্য কৃষক। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট ছিলেন।
এদিকে রবিবার বিকালে পরিবারের কাছে খবর আসে তিনি মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে পরিবারসহ গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার বড় ভাই জেলা ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুজ্জামান মনির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চত করে বলেছেন শাকিলের লাশ পেতে আমরা ঢাকা পৌছেছি। তবে মা এখনও জানে না শাকিল মারা গেছে।
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার জন্য মালিকপক্ষের অবহেলা ও অনিয়মকে দায়ী করছেন অনেকে।
জানা যায়, বিএম কনটেইনার ডিপোটি চট্টগ্রাম ভিত্তিক স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। ২০১১ সালে নেদারল্যান্ডসের একটা ব্যবসায়ী গ্রুপের সাথে যৌথ মালিকানায় ডিপোটি প্রতিষ্ঠিত হয়। আর স্মার্ট গ্রুপের এমডি মজিবুর রহমান। তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ।
জানা যায়, নিরাপত্তা ও যন্ত্রপাতির শর্ত পূরণ না করার কারণে ২০১৭ সালে ‘বিএম কনটেইনার ডিপো’র লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ রেখেছিল কাস্টম কর্তৃপক্ষ। পরে নবায়নের সুযোগ পেলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হয়নি। এছাড়া বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিনির্বাপণের জন্য ব্যবহৃত ‘ফায়ার ডিস্টিনগুইসারের’ মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে।
সীতাকুন্ডের অগ্নিকান্ডে মৃত্যুর মিছিলে খুলনার শাকিল
Leave a comment