এক জনের মৃত্যু শেখ মোহাম্মদ আলী শরণখোলা ঘূর্ণিঝড় গুলাবের প্রভাবে উত্তাল বঙ্গোপসাগরের দুবলারচর এলাকায় মঙ্গলবার তিনটি ফিশিংবোট ডুবির ঘটনায় রুহুল খা (৫০) নামে এক বোট মালিকের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, প্রবল ঢেউয়ে সাগরে টিকতে না পেরে ফিশিংবোটবহর সুন্দরবনসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। পূর্ব সুন্দরবনের জেলেপল্লী দুবলা ফরেষ্ট টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় মুঠোফোনে জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মঙ্গলবার ভোররাত চারটার দিকে দুবলার অফিসকেল্লা ও নারিকেলবাড়ীয়া এলাকার সাগরে দুইটি ফিসিংবোট ডুবে গেছে। এরমধ্যে অফিসকেল্লা এলাকায় বোট মালিক রুহুল খা (৫০) সাগরে ডুবে মারা গেছে। নিহত রুহুল খা বরগুনার পাথরঘাটার দক্ষিণ চরদুয়ানী গ্রামের এছাহাক খানের পুত্র। অপর বোটের মালিক দক্ষিণ চরদুয়ানী গ্রামের জসিম জোমাদ্দার। দুইটি বোট ডুবিতে সাগরে ভাসমান ১৪ জেলেকে অন্য ফিশিংবোটের জেলেরা উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। প্রবল ঢেউয়ে সাগরে মাছ ধরতে না পেরে অনেক ফিশিংবোট দুবলার মেহেরআলী, ভাঙ্গাখাল, ভেদাখালী, নারিকেলবাড়ীয়াসহ সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে বলে দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত ঐ কর্মকর্তা জানান। দুবলার মাঝেরকেল্লা থেকে পিরোজপুরের পাড়েরহাটের আলাল মিয়া নামে এক জেলে মুঠোফোনে জানান, মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে মাঝেরকেল্লা এলাকার সাগরে পাড়েরহাটের একটি ফিশিংবোট ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া ঐ বোটের জেলেদের অন্য বোটের জেলেরা উদ্ধার করেছে। বরগুনার পাথরঘাটার ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির নেতা গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ও পটুয়াখালীর মহিপুরের মৎস্য আড়ৎদার আলতাফ হোসেন জোমাদ্দার জানান, সোমবার বিকেল থেকে বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতি হঠাৎ খারাপ হলে সাগরে মাছ শিকাররত কয়েক হাজার ফিশিংবোট ঢেউয়ে টিকতে না পেরে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য উপকূলের দিকে ছুটতে থাকে। বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, শরণখোলা অঞ্চলের তিন শতাধিক ফিশিংবোট সুন্দরবনের দুবলা, হিরণপয়েন্ট, কচিখালী, পক্ষিদিয়ারচরসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি দু:খ প্রকাশ করে বলেন, এবছর জেলে মৎস্যজীবিরা চরম আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছেন। ৬৫ দিনের অবরোধের পরে জেলেরা তিনদফা সাগরে গিয়ে দুর্যোগের কবলে পড়ে শূণ্য ট্রলার নিয়ে ফিরেছেন। ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সামনে রেখে সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে জেলেরা আবার দুর্যোগের কবলে পড়েছেন এ যেন মড়ার উপর খাড়ার ঘা বলে তিনি মন্তব্য করেন।