আশাশুনি প্রতিনিধি : দারিদ্রতার করালগ্রাস থেকে রক্ষা পেতে স্বামী, সন্তান, পিতা-মাতা, পরিবার-পরিজন রেখে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রামের আমিনুর রহমানের কন্য গৃহবধু স্বপ্না খাতুন। কিন্তু না দারিদ্রতার ছোবল থেকে রক্ষা দূরে থাক প্রবাসে গৃহকত্রীর নির্যাতনে জর্জরিত হয়ে চক্ষু নষ্ট ও পঙ্গুত্ববরণের মত কঠিন বাস্তবতাকে পুজি করে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, বছরখানেক আগে বাসা বাড়ির শ্রমিকের কাজ নিয়ে সৌদি আরব যান স্বপ্না খাতুন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, প্রবাসে গৃহকত্রীর হাতে চরম নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাকে। আস্তে -াস্তে অন্ধত্ব আর পঙ্গুত্বকে সারথি করে দেশে ফিরেছেন স্বপ্না।
স্বপ্না খাতুন বলেন, কারণে অকারণে সৌদির বাসা মালিক মাকসুদ আলম ও তার স্ত্রী তাকে অমানুষিক নির্যাতন করতো। সর্বশেষ তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে তার হাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম আয়রণ মেশিনের তাপ দিয়ে ঝলসে দেয়। মাথায় মারাত্মকভাবে আঘাত করায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায় তার। জ্ঞান হারিয়ে ফেললে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি নির্যাতনে তার কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পঙ্গু হয়ে যায়।
আহত স্বপ্না খাতুনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তার পিতা আমিনুর রহমান। তিনি আরও বলে মেয়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে মেয়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তাদের যোগাযোগের মোবাইল নং ০১৯১৬৭৬৭৬৬২। একই সাথে এ ঘটনার সাথে জড়িত এজেন্সিসহ সৌদি নাগরিক মাকসুদ আলমকে আইনের আওতায় আনতে এবং ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট এম্বাসি ও মানবাধিকার সংস্থা এবং সর্বোপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন অসহায় ভুক্তভোগী পরিবার।
স্বপ্না জানান, ঢাকার বনানী এলাকার নাও ভিশন এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরব যান তিনি। সেখানে আলহাদি গ্রামের ১৩নং রোডের ১৩নং বাসায় মাকসুদ আলমের বাড়ীতে গৃহকর্মী হিসাবে কাজ পান।
স্বপ্নার মা আশুরা বেগম জানান, সৌদি থেকে বাংলাদেশ আসা এক যাত্রীর কাছে মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানতে পেরে ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে গুরুতর অসুস্থ মেয়েকে বাড়ীতে নিয়ে আসি।