জন্মভুমি ডেস্ক : সব বিধিনিষেধ কাটিয়ে চলতি বছর পূর্ণ কোটায় হজ করতে পারবেন বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের হজ প্রত্যাশীরা। চলতি বছর ২০ লাখ মুসল্লি হজ পালন করবেন বলে জানিয়েছে সৌদি আরব। করোনা-পূর্ব সময়ের মতো বৃহৎ পরিসরে পবিত্র হজ আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। গত ৯ জানুয়ারি সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের হজ চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। গত বছর যা ছিল ৫৮ হাজার ৭৪৫ জন। আগামী মে মাসের শেষ সপ্তাহে সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা করবে হজের প্রথম ফ্লাইট। এ বছর হজের খরচ নির্ধারণ, হজ প্যাকেজ ঘোষণা, ডলার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার সুরাহা হয়নি এখনো। ফলে হজ কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি হজ এজেন্সিগুলো। ইতিমধ্যে হজ যাত্রীদের বিমান ভাড়া ৭০ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। চলতি বছর থেকে এ ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় হয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া গত বছর ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। চলতি বছর তা ২ লাখ ১০ হাজার ৩৩৭ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে বিমান। তবে প্রস্তাবিত ভাড়া অযৌক্তিক এবং সংশোধনের দাবি করেছে হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। প্রস্তাবে বিমানের দাবি, গত বছর হজ মৌসুমের তুলনায় চলতি বছর জেট ফুয়েলের দাম বেড়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ। একই সময়ে বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার ২১ দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়েছে। ফলে আগের ভাড়ায় হজ ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব নয়। বিমান ভাড়া নিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা একমত হতে পারছেন না। ফলে জটিলতা বাড়ছে। হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাৎ হোসাইন তসলিম বলেন, বিমান ভাড়া বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দিয়েছে তা অসহনীয়। হজযাত্রীদের সুবিধার্থে বিমান ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করতে হবে। ভাড়া নির্ধারণ না হলে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা যাচ্ছে না। প্রতি বছর বাংলাদেশি হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। মন্ত্রিসভা বৈঠকে এসব প্যাকেজ অনুমোদন করার রেওয়াজ থাকলেও নতুন হজ আইনের কারণে তা আর মন্ত্রিসভায় তোলা হয় না। হজসংক্রান্ত নির্বাহী কমিটি এসব প্যাকেজ অনুমোদন করে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত নির্বাহী কমিটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধি ছাড়াও হাবের নেতারা রয়েছেন। এ নির্বাহী কমিটির প্যাকেজের আলোকে এজেন্সিদের সংগঠন হাবও একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করে থাকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেবল বিমান ভাড়াই নয় টাকার সঙ্গে রিয়ালের মূল্য বৃদ্ধির কারণে হজের খরচ গত বছরের কারণে কিছুটা বাড়বে। সংকট দেখা দিতে পারে ডলার নিয়েও। যদিও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান জানিয়েছেন, হজযাত্রীদের ডলার সংকট এড়াতে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার জন হজ পালন করবেন। ডলার-সংকট তৈরি হওয়ার মতো পরিস্থিতি অন্তত বাংলাদেশে এখনো হয়নি। এদিকে মধুমতি ব্যাংক লিমিটেডকে বাদ দেওয়া হয়েছে হজের অর্থ সংগ্রহ কার্যক্রম থেকে। একই সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ এক বছরের জন্য নবায়ন করা হয়েছে। গতকাল ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠি থেকে জানা গেছে এ তথ্য।