যশোর অফিস : ৪০ হাজার টাকা চুক্তিতে মৎস্য ব্যবসায়ী মামুন হাসান ওরফে মামুনকে হত্যাচেষ্টা করা হয়। মামুনের ব্যবসায়ীক পাওনা ৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতে চাঁচড়ার বিএনপি নেতা ঠিকাদার সাইদ তার শ্যালককে রক্ষা করতে এই হত্যাচেষ্টা পরিকল্পনা করা হয়। অপরদিকে পুলিশের প্রেসক্রিপশনে মামলার আসামি না করায় ঘটনার ৫দিন পার হলেও কোন আসামিকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু মামুন হত্যাচেষ্টার প্রধান আসামি কিলার রনি পুলিশের নিরব ভুমিকায় সোমবার রাতে চাঁচড়া রায়পাড়ায় বোমা ফাটিয়ে আনন্দ উল্লাস করে বেড়াচ্ছে।
সে কারণে রনির ভয়ে আতংকিত ভুক্তভোগী পরিবারসহ এলাকাবাসি। অতি দ্রুত রনিসহ মামুনের হত্যাচেষ্টাকারীদের আটকের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছে এলাকাবাসি।
এই ঘটনার মামলার আসামিরা হলো, চাঁচড়া রায়পাড়া তুলোতলার কামরুল ইসলাম কালা বাবুর ছেলে রনি (২৩), কবির হোসেনের ছেলে মুরাদ হোসেন (২০), সিরাজের ছেলে হাসান (২১), হবির ছেলে গাজী (২০), চাঁচড়া ডালমিল এলাকার মৃত কাদেরের দুই ছেলে কামরুল ইসলাম সুমন (৪২) ও পিন্টু (৪০), চেকপোস্ট এলাকার আব্দুর রাজ্জাক মোড়লের ছেলে ঠিকাদার সাইদ (৪২), শংকরপুর বাস টার্মিনাল এলাকার জাফরের ছেলে সজিব (১৯) এবং রায়পাড়ার ছাকিন (১৯)।
বাদী আহত মামুনের বোন তাসলিমা আক্তার রানী মামলায় বলেছেন, তার ভাই মামুন হাসান মীর দীর্ঘদিন ধরে চারা মাছের ব্যবসা করে আসছিলেন। কয়েক মাস পূর্বে স্বল্প সময়ের জন্য ২২ লাখ চারা মাছ (যার মূল্য ৭ লাখ টাকা) আসামি চাঁচড়া ডালমিল এলাকায় পিন্টুর পুকুরে রাখেন। ওই মাছ চুরি করে অন্যত্র বিক্রি করে দেয় পিন্টু। কয়েকদিন পরে চারা মাছ বিক্রি করতে ক্রেতা নিয়ে পিন্টুর পুকুরে ডান মামুন। এসময় দেখেন কোন মাছ নেই। এরপরে পিন্টুকে চাপ প্রয়োগ করা হলে তিনি চুরি করে বিক্রি করেছেন বলে মামুনের কাছে স্বীকার করেন এবং টাকা ফেরতের জন্য আশ্বাস্ত করেন। সেই মোতাবেক ঘটনার দিন ২৫ মে সন্ধ্যা ৬টার দিকে মাছের সেই পাওনা টাকা পাওয়ার জন্য পিন্টুর কাছে গিয়েছিলেন। টাকা না দেয়ায় ফিরে আসেন মামুন। রেলগেট কয়লাপট্টি পৌছানো মাত্র পিন্টু ভগ্নিপতি ঠিকাদার সাইদ ফোন করে মামুনের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান। অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেয়ার সাথে সাথে সন্ত্রাসী রনির নেতৃত্বে সকল আসামি সেখানে এসে মামুনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। শুধু তাই নয় রেল লাইনের পাথর ছুঁড়ে মারে মামুনের সারা শরীরে। পাথরের আঘাতে মামুন পড়ে গেলে তাকে উপুর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে আনন্দ উল্লাস করতে করতে চলে যায়। খবর পেয়ে মামুনের স্বজনরা উদ্ধার করে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় মামুনের বোন তাসলিমা আক্তার রানী ৯ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় এজাহার দাখিল করেন। ওই এজাহারে ঘটনার সাথে জড়িতদের নাম উল্লেক করা হলেও সেটা মানতে নারাজ পুলিশ। ফলে কার নাম থাকবে কিনা সেই প্রেসকিপশন পুলিশ দিয়েছিল। আর পুলিশের দেয়া প্রেসকিপশনে বিএনপি নেতা ঠিকাদার সাইদ, তার শ্যালক পিন্টু, সুমন এবং কামরুলের নাম বাদ দিয়ে আবারও এজাহার লেখানোর কথা বলা হয়। পরে অনেক দেনদরবার করে ওই ৯ জনের নামে মামলা নিয়েছে পুলিশ। কিন্তু ঘটনার ৬দিনেও কোন আসামি আটক করা হয়নি। ফলে মূল আসামি রনি আনন্দ উল্লাসে এবং নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে চাউর করতে গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রায়পাড়ায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
এই ব্যাপারে চাঁচড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক তারিকুল ইসলাম বলেছেন, একটি বোমা বিস্ফোরণের সংবাদ শুনেছি। কিন্তু কারা এখনো তা জানা সম্ভব হয়নি।