পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে দুই ভাইকে বাদ দিয়ে ওয়ারেশ কায়েম সনদ প্রদান
আপন ভাই কর্তৃক এলাকা ছাড়তে হুমকি প্রদান
খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি : নগরীর দৌলতপুর থানাধিন বিনাপানি স্কুল সংলগ্ন শরৎ আগরওয়ালা নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওয়ারেশ সনদ জালিয়াতি করে পিতার সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। মৃত মহাদেব আগরওয়ালার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে নির্মল আগরওয়ালার স্বজনসহ অপর ভাইকে বঞ্চিত করতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছ থেকে এ ওয়ারেশ সনদ আনা হয়। স্থানীয় কাউন্সিলর কর্তৃক দ্ইু ধরনের ওয়ারেশ সনদ প্রদান করায় কোনটি সঠিক জানাতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায় অনুপ আগারওয়াল। পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করায় এলাকা ছাড়া করতে সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে জীবন নাশের হুমকি দেওয়ায় থানায় সাধারণ ডায়রী করেছে (যার নং-১৫৬, তাং৩/৮/২৩) ভুক্তভোগী অনুপ আগরওয়ালা।
দৌলতপুর থানায় করা জিডি এবং লিগ্যাল নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর থানাধিন বিনাপানি স্কুল সংলগ্ন মৃত মহাদেব আগরওয়ালার বিপুল সম্পত্তি এবং পরিমল আগরওয়ালা, নির্মল আগরওয়ালা, স্বজন আগরওয়ালা, কমোল আগরওয়ালা এবং শরৎ আগরওয়ালা নামে ৫ সন্তানকে রেখে গত ২০০০ সালের ১৩ মে বার্ধক্যজনিত কারণে পরলোকগমন করেন। মহাদেবের মৃত্যুর পর সম্প্রতি মহাদেবের সন্তান নির্মল আগরওয়ালার স্বজনরা জানতে পারে ওয়ারেশ কায়েম সনদে মহাদেবের দুই সন্তানকে বাদ দিয়ে তিন সন্তান দেখিয়ে মহাদেবের রেখে যাওয়া সম্পত্তি বিক্রয় করা হয়েছে। জানতে পেরে মহাদেবের সন্তান মৃত নির্মল আগরওয়ালার পুত্র অনুপ আগরওয়ালা স্থানীয় ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিস থেকে গত ১০ মে তারিখে ওয়ারেশ কায়েম সনদ তোলে যাতে মৃত মহাদেবের প্রকৃত পাঁচ সন্তানকে ওয়ারেশ হিসাবে দেখানো হয়েছে। এ সময় তিনি জানতে পারেন, একই অফিস থেকে ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর (স্মারক নং-১১৩/২০১৮) ওয়ারেশ কায়েম সনদপত্র তোলা হয়। যেখানে তথ্য গোপন করে অসৎ উদ্দেশ্যে জালিয়াতির মাধ্যমে দুই ভাইকে বাদ দিয়ে তিন ভাই দেখিয়ে ওয়ারেশ কায়েম সনদ তোলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের অফিসে হাটাহাটি করে সমাধান না পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে এবং মহাদেবের পুত্র শরৎ আগরওয়ালকে উকিল নোটিশ পাঠান অনুপ আগরওয়ালা।
অনুপ আগরওয়ালা জানায়, তার দাদুর রেখে যাওয়া সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য জাল জালিয়াতি করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের অফিস থেকে তার বাবা এবং চাচা কমোল আগরওয়ালকে বাদ দিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে ওয়ারেশ সনদ বের করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর তিনি স্থানীয় ঐ কাউন্সিলরের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সম্প্রতি তিনি পৈত্রিক ভিটায় আসলে তাকে এলাকা ছাড়তে শরৎ আগরওয়ালাগং গালিগালাজসহ জীবন নাশের হুমকি প্রদান করে। এ বিষয়ে তিনি দৌলতপুর থানাকে অবহিত করে জিডি করেন। তিনি বলেন আমি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ বিষয়ে ওয়ার্ডের সচিব জুলফিকার আলী বলেন, ওয়ারেশ কায়েম সনদ নিয়ে সমস্যা আছে আমি শুনেছি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না, কাউন্সিলর সাহেব ভালো বলতে পারবে। এ ধরনের সার্টিফিকেট কমিশনার নিজে দিয়ে থাকেন।
কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মাদ আলী বলেন, ২০১৮ সালে আমি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই ঐ পরিবার আমার সাথে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে আমি তদন্ত না করেই তিন জনের নামে ওয়ারেশ কায়েম সনদ দিয়ে ছিলাম। পরে জানতে পারলাম মহাদেব আগরওয়ালার মোট ৫টি সন্তান রয়েছে। এখন নতুন করে কেন ওয়ারেশ সনদ দিচ্ছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মহাদেবের পরিবারের সদস্যের লিখিত আপত্তি থাকায় এবং যারা ওয়ারেশ সনদ চাচ্ছেন তারা আমার এলাকার ভোটার না হওয়ায় তাদেরকে ওয়ারেশ সনদ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। উকিল নোটিশের বিষয়ে তিনি বলেন একটি লিগ্যাল নোটিশ পেয়েছি যথা সময়ে এর জবাব দাখিল করা হবে।