হারুন-অর-রশীদ : উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবে অফসিজন তরমুজের আবাদে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। এর পিছানে সব রকম সহযোগিতা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও মৃত্তিকা সম্পাদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট’র গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর জিকেবিএসপি প্রকল্প। খুলনা কৃষি অঞ্চলে এবার আগাম ফসল হিসেবে তরমুজের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী আবাদ করা হয়েছে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৩০ হেক্টর। আবাদ করা হয়েছে ৪৯৬হেক্টর। শতকরা ১১০.৬শতাংশ আবাদ করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর জিকেবিএসপি প্রকল্প’র পক্ষ থেকে ডুমুরিয়া, বটিয়াঘাটা ও ফুলতলা উপজেলায় মাটি ও সার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ঘেরের পাড়ে ৩০জন কৃষক ২০ হেক্টর জমিতে অফসিজের তরমুজ চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে খরচ ২০-২৫ টাকা। বিক্রি হচ্ছে দেড়লাখ টাকা। আবাদকৃত তরমুজের মধ্যে খুলনা জেলায় ৪০০ হেক্টর, বাগেরহাট ৩৩ হেক্টর, সাতক্ষীরায় ২৭ ও নড়াইলে ১৪ হেক্টর।
জাতের মধ্যে রয়েছে এশিয়ান-২, পাকিজা, সুপার সুইটস, সুইট ড্রাগন, ড্রাগন ও রেট ড্রাগন। এর মধ্যে এর মধ্যে এশিয়ান-২ হলুদ বর্ণের। অফসিজেনের তরমুজ ঘেরের পাড়ে চাষ করা হয়েছে।
ঘেরের পানিতে মাছ সাতার কাটছে। উপরে মাচায় ঝুলছে সারি সারি তরমুজ। চাষি দু’দিক থেকে লাভবান হচ্ছেন। গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চেয়ে অফসিজেনের তরমুজে খরচ কম লাভ বেশী। কোন সেচের প্রয়োজন হয়না। প্রতি হেক্টরে ফলন ৪০ মেট্রিকটন।
মাচায় ঝুলছে রসালো ফল ও বাতাসে দোল খাচ্ছে তরমুজ। যাতে ছিড়ে না পড়ে তার জন্য নেটের ব্যাগ দিয়ে বেঁধে দেয়া হয়েছে। ঘেরের পাড়ের জমি আগে পতিত থাকতো। এখন এখানে ফলছে সোনালী ফসল তরমুজ। খরায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজের লাভের মুখ দেখতে পারেনি কৃষক। ঘেরের পাড়ে অফসিজেনের তরমুজ বাম্পার ফলন হয়েছে। মাচার ওপরে সবুজের সমরহ। আর নীচে হাজারো তরমুজ। নিয়মিত সার ও কীট নাশক প্রয়োগ করা হয়েছে। জিকেবিএসপি এই প্রকল্প থেকে কৃষকদের বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ, বীজ, সার, কীটনাশক, নেট এবং শ্রমিকদের শ্রম মজুরী প্রদান করা হয়েছে।
সরকার দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে কৃষি বিপ্লব ঘটানোর জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কৃষক ঘেরের পাড়ে তরমুজ চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অধিক দামে বিভিন্ন হাট বাজরে বিক্রি করছেন। খুলনায় ৫০-৬০ টাকা দরে কেজি বিক্রি হচ্ছে। গোপালগঞ্জ-খুলনা- বাগেরহাট -সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প (জিকেবিএসপি প্রকল্প) কর্মকর্তা অমরেন্দ্রনাথ বিশ^াস বলেন, গ্রীষ্ম কালে খরার কবলে পড়েছে কৃষক। তাদের চরম ক্ষতি হয়েছে। লাভের মুখ দেখতি পারেনি। বর্ষা মৌসুমে কৃষক লাভবান হবেন। সার, বীজ, কীটনাশকসহ সব কিছু বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রষারণ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহন কুমার ঘোষ বলেন, বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশা করা যায় উৎপাদন ভালো হয়েছে। বর্ষায় সেচের প্রয়োাজন হয়না। অফসিননের তরমুজ চাষে খরচ কম। লাভ বেশী।