যশোর প্রতিনিধি : যশোরের অভয়নগর থানা পুলিশ হেফাজতে আফরোজা বেগম (৪০) নামে আটক এক মাদক ব্যবসায়ী নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অভয়নগর থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনার পথে তার মৃত্যু হয়। স্বজনদের দাবি মিথ্যা অভিযোগে আটকের পর নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে তাকে। তবে পুলিশের দাবি মাদকসহ আটক নারী হৃদরোগে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। পুলিশ তাকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছিল ও তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোরে পাঠানো হয়েছিল বলে ফোনে জানান অভয়নগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম।
পুলিশ হেফাজতে মৃত আফরোজা বেগম যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া মহাশ্মশান নর্থ বেঙ্গল রোডের জলিল মোল্লার স্ত্রী।
মৃত আফরোজা বেগমের ছেলে মুন্না মোল্লা ও স্বামী এবং আত্মীয়-স্বজনরা বলেছেন,স্থানীয় একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে অভয়নগর থানার এএসআই সিলন আলি,এএস আই শামসুল হক,শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাদের বাড়িতে যায়। এরপর নিজেদের কাছে থাকা ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে তার মাকে আটক দেখায়। এসময় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্য তার মাকে ফ্যানের সাথে চুল বেঁধে ঝুলিয়ে মারপিট করে। পরে রাত একটার দিকে থানায় নিয়ে যায়। সকালে থানায় গিয়ে দেখতে পায় তার মা খুব অসুস্থ। পুলিশকে অনুরোধ করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা কয়েকটি টেস্ট দিলেও পুলিশ সদস্যরা সেগুলো করতে না দিয়ে ফের থানায় নিয়ে যায়।এরপর আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসার রওনা হলে যশোর আসার পথেই তার মায়ের মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি।
তারা অভিযোগ করে আরো বলেন,পুলিশ তাদের ঘরে থাকা ইজিবাইক বিক্রির ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে এসেছে। আরো দুই লাখ টাকা ঘুষের দাবিতে নির্যাতন করে তার মাকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আব্দুস সামাদ জানান,ওই নারীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া তার মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়।
যশোর হাসপাতালে নেয়ার পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য জানা যায় ওই নারীকে আটক এবং অন্যান্য স্থানে অভিযানের সময় ডিউটিতে এসআই সাইফুল ইসলাম,এএসআই সিলন আলী,এএসআই শামসুল হক,নারী কনস্টেবল রাবেয়া খানম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রাতে আটক নারী আফরোজা থানা হেফাজতে থাকাকালে ডিউটিতে নিয়োজিত ছিলেন নারী কনস্টেবল ময়না খাতুন এবং আজ রোববার সকালে সেন্ট্রি ডিউটিতে ছিলেন নারী কনস্টেবল সীমা আক্তার,ও যশোর হাসপাতালে চিকিৎসার দেওয়ার পথে ডিউটিতে ছিলাম নারী কনস্টেবল ফারজানা আক্তার ও রওশন আরা।
আফরোজা বেগমকে পুলিশ ৩০ পিচ ইয়াবাসহ আটক করেন। পরে তার বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২০১৮ সালের ৩৬(১) ১০ (ক) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং৫। আফরোজা বেগম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা করার অভিযোগ রয়েছে বলে এলাকার কয়েকটি সূত্র থেকে জানা যায়।