জন্মভূমি রিপোর্ট
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যরিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে কোনো কিছু দাবি করে লাভ নেই। আন্দোলন সংগ্রাম করে রাজপথে অধিকার আদায় করতে হবে। সেই অধিকার হবে এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা। কেননা আওয়ামী লীগ কখনই জনগণের ভোটের নির্বাচিত হয়নি। সেই ৭৩’ সালেও আওয়ামী লীগ বিনা ভোটে নির্বাচনের বীজ বপন করেছিল। তিনি আওয়ামী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল প্রসঙ্গে বলেন, সে দিন বেশি দূরে নয় এই আওয়ামী লীগ শহীদ জিয়ার নাগরিকত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি শারনার্থী দল। তারা ভারতে গিয়ে শরনার্থী শিবিরে যেয়ে রেশন খেয়ে মুক্তিযোদ্ধা সেজেছে। আর শহীদ জিয়া শুধু কালুরঘাটে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে খ্যান্ত হননি, তিনি হালুরঘাটে যুদ্ধ করেছেন। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে সিলেট মুক্ত করা হয়েছে। তিনি জীবনবাজী রেখে যুদ্ধ করেছেন। আজ তার খেতাব বাতিলের দু:সহাস দেখায়।
ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তোম ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেদিন কুমিল্লায় ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশিদকে পরাজিত করার জন্য শেখ মুজিব ভোটের বাক্স ঢাকায় এনে খোন্দাকার মুশতাক আহমেদকে এমপি বানিয়েছিলেন। আজ শেখ হাসিনাকে বলবো আপনি যাদের বিনা ভোটে এমপি বানাচ্ছেন, তারাই একদিন আপনার সঙ্গে বেইমানী করবে। তিনি দেশের বর্তমান অবস্থা বিবরণ দিয়ে বলেন, পত্রিকার পাতায় আজ দেখি,ধর্ষণ, ব্যাংক থেকে টাকা লুট, অর্থ পাচার, ক্যাসিনো ও ইয়াবা-গাঁজার খবর। তাই এখন মানুষ বলছে আওয়ামী লীগ মানে ধর্ষণ লীগ, ক্যাশিনো লীগ, পাচার লীগ ও ইয়াবা-গাঁজা লীগ।
তিনি বলেন, পুরাতন মুসলিম লীগরে নাতি-পুতিরা আওয়ামী লীগে যোগ দিলে তারাই হয়ে যাচ্ছে হাসিনার মুক্তিযোদ্ধা আর আমরা রনাঙ্গনে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, তারা অন্য দলে থাকলে হয়ে যাচ্ছি রাজাকার।
তিনি দেশের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে বলেন, জার্মানির হিটালারের নাৎসী বাহিনীর সদস্য ছিল ৬০ লাখ। তখন জার্মানিতে লোকসংখ্যা ছিল ৬ কোটি। ওই ৬ কোটি মানুষ হিটলার বাহিনীর কাছে চুপ থাকায় ৪৫ বছর বছর খেসারত দিতে হয়েছে জার্মান জাতিকে। তেমনি আজ যারা চুপ করে আছেন তারা ভাবনে না আপনারা রেহাই পাবেন। আগামীতে আপনাদেরকেও খেসারত দিতে হবে। তাই আসুন আর দেরি নয় সংগ্রামের মাধ্যমে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করে একটি গণতান্ত্রিক শাসন ব্যাবস্থা চালু করি।
ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তোম শনিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনায় আয়োজতি মহাসমাবেশে প্রধার অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
সমাবেশের বিশেষ অতিথি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামছুজ্জামান দুদু বলেন, এই বছর হবে সরকার পতনের বছর, এই বছর হবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা গ্রহণের বছর, এই বছরই হবে দেশ নায়ক তারেক রহমানের দেশে ফেরার বছর। তিনি বলেন, দেশের জুট মিল, চিনির কল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিক কর্মচারীরা ও তাদের সন্তানরা না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। আর আওয়ামী লীগের নেতারা ব্যাংক লুট করবে কি মজা। এক ছাত্র লীগ নেতা ৫ হাজার একর জমির মালিক হয়েছে। দেশে পাচার করেছে আড়াই হাজার কোটি টাকা, দেশ থেকে সাড়ে ৭ লক্ষ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। জনগণের প্রতিটি পয়সার হিসাব দিতে হবে।
বিশেষ অতিথি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নেতাই রায় চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেন, জোয়ার দেখেছেন, ভাটা দেখেন নাই,এবার ভাটা ধেখর জন্য প্রস্তুত থাকুন। ৪০ চোরের সর্দারানী হয়ে বাঁচতে পারবেন না।
খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি ও বিগত কেসিসি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক হুইপ মশিউর রহমান, চেয়ারপর্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মজিবর রহমান সরোয়ার, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী ড: শাহাদাত হোসেন, ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অনিন্দ্যি ইসলাম অমিত, মেহেদী হাসান রুমীসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
আন্দোলনের মাধ্যমে অধিকার আদায় করতে হবে : ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর
Leave a comment