জন্মভূমি ডেস্ক
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনার সময় বিস্ফোরণে বাংলাদেশি ৩ শান্তিরক্ষী নিহত এবং ১ জন আহত হয়েছেন।
আইএসপিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনার সময় সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ০৪ অক্টোবর বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের একটি গাড়ি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণের মুখে পড়ে। এতে ৩ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত এবং একজন আহত হন।
নিহত শান্তিরক্ষীরা হলেন- সৈনিক জসিম উদ্দিন (বয়স ৩১, গ্রামঃ কাটিঙ্গা, থানাঃ বিজয়নগর, জেলাঃ ব্রাহ্মনবাড়িয়া), সৈনিক জাহাংগীর আলম (বয়স ২৬, গ্রামঃ দক্ষিণ টিট পাড়া, থানাঃ ডিমলা, জেলাঃ নিলফামারী) এবং সৈনিক শরিফ হোসেন (বয়স ২৬, গ্রামঃ বাড়াক রুয়া, থানাঃ বেলকুচি, জেলাঃ সিরাজগঞ্জ)। এতে টহল কমান্ডার মেজর আশরাফুল হক আহত হন।
আইএসপিআর জানায়, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের পশ্চিম সেক্টরে বোয়ার এলাকায় মোতায়েন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন (ব্যানব্যাট-৮) ২০২১ সালের ০৯ নভেম্বর থেকে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে। দুর্গম এলাকায় মোতায়েন অন্যতম অস্থায়ী ক্যাম্প কুই হতে পরিচালিত যান্ত্রিক টহলের একটি দল মেজর আশরাফের নেতৃত্বে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কাইতা এলাকায় টহলে যায়। বাংলাদেশ সময় রাত ১টা ৩৫ মিনিটে ফেরার পথে টহল কমান্ডার মেজর আশরাফকে বহনকারী প্রথম গাড়িটি মাটিতে পুতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে পতিত হয়। এতে গাড়িটি প্রায় ১৫ ফুট দূরত্বে ছিটকে পড়ে। ঘটনাস্থলেই সৈনিক শরিফ, সৈনিক জাহাংগীর ও সৈনিক জসিম মারাত্মকভাবে আহত হন।
ঘটনার পর পরই আহত শান্তিরক্ষীদের জরুরি ভিত্তিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দুর্গম এলাকা, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং ঘন অন্ধকারের মধ্যে উদ্ধার তৎপরতার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেওয়া হয়। মিশন সদর, জাতিসংঘ সদর, এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দ্রুততার সাথে ১৪৪ কিঃমিঃ দূরে বোয়ার এ অবস্থিত মিনুসকা হাসপাতালে নিয়ে আসলে স্থানীয় সময় ০৬৩০-০৭০৫ ঘটিকার মধ্যে (বাংলাদেশ সময় ১১৩০-১২০৫ ঘটিকার মধ্যে) কর্তব্যরত চিকিৎসক সৈনিক মোঃ জসিম উদ্দিন, সৈনিক মোঃ জাহাংগীর আলম এবং সৈনিক শরিফ হোসেনকে মৃত ঘোষনা করেন। অপর আহত শান্তিরক্ষী মেজর মো. আশরাফুল হক চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে নিয়োজিত অন্যান্য শান্তিরক্ষীগণ নিরাপদে আছেন। শাহাদাৎবরণকারী সেনাসদস্যদের মৃতদেহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশে আনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়েও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীরা আফ্রিকার ৮টি দেশে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে চলেছে এবং জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।