ক্রীড়া প্রতিবেদক : মিরপুরের ধীরগতির উইকেটে আরও একটা লো স্কোরিং ম্যাচ দেখল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দেয়া ছোট লক্ষ্যে খেলতে নেমে তাসের ঘরের মতো ভেঙে গেছে খুলনা টাইগার্সের ব্যাটিং লাইনআপ। টাইগার্সদের ৬ ব্যাটারই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৩৪ রানের ব্যবধানে জয় পেয়েছে কুমিল্লা।
আজ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরের শের-ই-বাংলায় আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা। জবাবে ১৮ ওভার ৫ বলে ১১৫ রানে থেমে গেছে খুলনা। কুমিল্লার আমের জামাল একাই শিকার করেছেন ৫ উইকেট।
কুমিল্লার দেওয়া ১৫০ রানের লক্ষ্যে খুলনার হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন এনামুল হক বিজয় ও ইভেন লুইস। এই দুই ব্যাটারে শুরুটা ভালো করেছিল খুলনা টাইগার্স। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি ওপেনার বিজয়। ১২ বলে ১৯ রান করে আলিস আল ইসলামের বলে বোল্ড আউট হন তিনি। এদিকে দ্বিতীয় উইকেটে নামা আফিফ হোসেনও ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি। ৯ বলে ৫ রান করে আউট হন এই টাইগার ব্যাটার।
তৃতীয় উইকেটে আকবার আলীও সঙ্গ দেন আফিফের। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৮ বলে ৫ রান করে ন তিনি। এরপরই খুলনাকে চেপে ধরে কুমিল্লা। এক প্রান্ত আগলে রাখা চেষ্টা করলেও তা ধরে রাখতে পারেননি ইভেন লুইসও। ১৪ বলে ১০ রান করে ক্যাচ আউট হন তিনি। ৩ বলে শূন্য রান করে পারভেজ ইমন আউট হলে দলীয় ৪৯ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে খুলনা।
সেখান থেকে মোহাম্মদ নাওয়াজকে সঙ্গে নিয়ে খুলনা শিবিরে হাল ধরার চেষ্টা করেন নাহিদুল ইসলাম। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি নাওয়াজ। ১৩ বলে ৭ রান করে স্বদেশি আমির জামালের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। ১৩ বলে ১৩ রান করে নাহিদুলকে সঙ্গ দেন ফাহিম আশরাফ। ২৪ বলে ২১ রান করে নাহিদুল ইসলাম আউট হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় খুলনা টাইগার্স।
হার গুনতে থাকা খুলনার শেষ দিকে ওয়াসিমর ১২ বলের ২৩ রান কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৭ বল হাতে রেখেই ১১৫ রানে অলআউট হয় খুলনা। এতে ৩৪ রানের জয় পায় কুমিল্লা। শেষ দিকে ১২ বলে ২৩ রান করে ওয়াসিম জুনিয়র আউট হলে ৭ বলে হাতে থাকতেই ১১৫ রানে অলআউট হয় খুলনা। ৫ বলে ৪ রান করে অপরাজিত থাকেন মুকিদুল ইসলাম। এতে ৩৪ রানের জয় পায় কুমিল্লা। ভিক্টোরিয়ান্সদের হয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট নেম আমের জামাল।
এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লার হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেম অধিনায়ক লিটন কুমার দাস ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। এই দুই ব্যাটারের দলকে দারুণ সূচনা এনে দেন। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৬৯ রান। তবে ইনিংসের দশম ওভারে ঘটে বিপত্তি। কুমিল্লার শিবিরে জড়া আঘাত হানেন নাসুম আহমেদ। প্রথমে ৪৫ রান করা লিটনকে বোল্ড করেন নাসুম।
একই ওভারের শেষ বলে ২৮ বলে ২১ রান করা রিজওয়ানকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তিনি। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পরে কুমিল্লা। সেখান থেকে ইংলিশ তারকা উইল জেকস ও তাওহীদের ব্যাটে চাপ সামলয়ে উঠে কুমিল্লা। তবে দলীয় ৯০ রানে উইল আউট হলে ভাঙে এই জুটি। সাজঘরে ফেরার আগে ২৭ বলে ২২ রান করেন তিনি।
উইল ফেরার পর তাওহিদ হৃদয়েই ভরসা ছিল কুমিল্লার। শুরুটা ভালো করলেও বেশিদূর যায়নি তার ইনিংস। ১৭ বলে ১৬ রান করা হৃদয়কে ফেরান ফাহিম আশরাফ। শেষের দিকে জাকের আলি-মাহিদুল ইসলামের জুটির ক্যামিওতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে হারিয়ে ১৪৯ রানের লড়াকু পুঁজি পায় কুমিল্লা।
২ চার ও এক ছয়ে ৮ বলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন জাকের। এক ছক্কা ও এক চারে মাহিদুল করেন ৫ বলে ১০ রান। খুলনার হয়ে বল হাতে দুইটি করে উইকেট নেন নাসুম আহমেদ ও মোহাম্মদ নাওয়াজ।