ঢাকা শহরে মেট্রোরেলের রুট বিস্তারে সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধু রাষ্ট্র জাপান। ইতোমধোই জাপানের ঋণে মেট্রোরেল লাইন-৬-এর আওতায় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এ পর্যন্ত এ প্রকল্পের অগ্রগতি ৪৪.৬৭ শতাংশ। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন বর্ষ ২০২১ সালের বিজয় দিবসে এই মেট্রোরেল উদ্বোধনের পরিকল্পনা আছে।
২০১২ সালে গৃহীত হয় মেট্রোরেল প্রকল্প। এ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার মধ্যে সাহায্য হিসেবে জাপান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা ঋণ দিচ্ছে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যয় বিবেচনা করে আরো দুটি মেট্রোরেল লাইন ১ ও ৫ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাশ হয়েছে। দ্রæত সময়ের মধ্যেই দৃশ্যমান হবে এ দুই প্রকল্পের কাজ। নতুন এ দুটি মেট্রোরেলে জাপান বাংলাদেশকে আরো ৬৪ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা ঋণ দিতে চলেছে। সহজ শর্তে এ ঋণ দিচ্ছে জাপানের সরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। অবকাঠামো খাতের জন্য এর সুদ হার হবে ১ শতাংশ। তবে স্বাস্থ্য ও সেবা খাতের জন্য সুদ হার যথাক্রমে ০.৯ শতাংশ ও ০.১ শতাংশ। দশ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে পরিশোধ করতে হবে এ ঋণ। গ্রেস পিরিয়ডের আওতায় প্রথম ১০ বছর সুদ ছাড়াই মূল ঋণের অংশ পরিশোধ করতে হবে।
এ ব্যাপারে ইআরডি’র যুগ্মসচিব (জাপান-আমেরিকা উইং) মোহাম্মদ আশরাফ আলী ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, নতুন দুই মেট্রোরেল প্রকল্পে জাপান বাংলাদেশকে ঋণ দিচ্ছে। এখনও চুক্তি হয়নি। আমরা ঋণচুক্তির জন্য কাজ করছি। সব কিছু ফাইনাল করেই আপনাদের জানানো যাবে। সব চূড়ান্ত করার আগে মন্তব্য করা যাবে না।
সূত্র জানায়, ঢাকাবাসীর জন্য আরো একটি মেট্রোরেল প্রকল্প এমআরটি-১ এর রুট নির্মিত হতে চলেছে। ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা ব্যয় ধরে এ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।। এর আওতায় এয়ারপোর্ট থেকে কমলাপুর ও নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত মোট ২৭.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এলাইনমেন্ট ঠিক করা হয়।
মেট্রোরেল লাইন-৫: মেট্রোরেল লাইন-৫ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। নতুন এই মেট্রোরেলের এলাইনমেন্ট হলো- হেমায়েতপুর-বালিয়ারপুর-মধুমতি-আমিনবাজার-গাবতলী-দারুসসালাম-মিরপুর-১-মিরপুর-১০-মিরপুর-১৪-কচুক্ষেত-বনানী-গুলশান-২-নতুনবাজার থেকে ভাটারা পর্যন্ত। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২৮-এর ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হবে। হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘের এ লাইনটির ১৪ কিলোমিটার হবে পাতাল রুট; বাকি ছয় কিলোমিটার এলিভেটেড রুট। ফলে একই রুটে পাতাল ও উড়াল ব্যবস্থার সমন্বয়ে মেট্রোরেল হবে। প্রস্তাবিত এমআরটি রুট-৫-এ (নর্দান রুট) ১৪টি স্টেশন থাকবে। এর মধ্যে নয়টি স্টেশন হবে আন্ডারগ্রাউন্ডে, বাকি পাঁচটি স্টেশন থাকবে মাটির ওপরে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে জাইকা দেবে ৩০ হাজার ৭৫৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।