গাজায় হাসপাতালে হামলা
জন্মভূমি ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার আল আহলি হাসপাতালে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে এই হামলার দায় স্বীকার করেনি ইসরায়েল। এবার একই সুরে কথা বললেন ইসরায়েল সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ নিয়ে স্যাটেলাইট ভিডিওর মাধ্যমে ইসরায়েলকে প্রমাণ দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।
মঙ্গলবার রাতে আল আহলি হাসপাতালে হামলা চালায় ইসরায়েল। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠলে ইসরায়েল দায় অস্বীকার করে বলে যে, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের ছোড়া রকেট ভুলক্রমে হাসপাতালে পড়েছে। এমন দাবি অস্বীকার করেছে গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাস ও ইসলামিক জিহাদ।
বুধবার দুপুরের আগে ইসরায়েলের তেল আবিবে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরপরই তিনি জানান, ”তিনি যা দেখেছেন তার উপর ভিত্তি করে আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে বিস্ফোরণটি অন্য পক্ষের দ্বারা সৃষ্ট হয়েছিল”। তার এই দাবি ইসরায়েলের দাবির সঙ্গে মিলে যায়।
এদিকে এক প্রতিবেদনে আল জাজিরা জানিয়েছে, হাসপাতালে হামলার পর ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা জানান- যে পাঁচটি হাসপাতাল থেকে লোকদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
গাজার হাসপাতালে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। তারা এ হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে। রাশিয়া বলেছে যে, ইসরায়েলকে প্রমাণ করতে বলছে যে তারা গাজার হাসপাতালে হামলা চালায়নি।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, ‘গাজার হাসপাতালে হামলা চালিয়ে কয়েকশ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে, এটি একটি মর্মান্তিক অপরাধ। ইসরায়েলের উচিত স্যাটেলাইট চিত্র সরবরাহ করা যাতে প্রমাণ করা যায় যে তারা হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল না।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা দেশটির সংবাদমাধ্যমক জানান, হাসপাতালে হামলা একটি মর্মান্তিক ‘অমানবিক’ অপরাধ।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার গাজার আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রোগী, নারী ও শিশু রয়েছে।
এক বিবৃতি ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো শত শত মানুষ চাপা পড়ে আছে। হামলার ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটি যুদ্ধাপরাধ।
হামলার পরপর ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটি ভয়াবহ অপরাধ, গণহত্যা। ইসরায়েলকে যে সব সমর্থন করছে এ হামলার দায় তাদেরও রয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা এই হামলা বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, তাদের কাছে এখনো সব তথ্য আসেনি। সম্ভব হলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
জাতিসংঘসহ মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো হাসপাতালে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ইরান, তুরস্ক, জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন দেশের সরকার-রাষ্ট্রপ্রধানরাও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।