স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ মিলেছেÑ বাংলাদেশের জন্য এ সংবাদ অনেক বড় প্রাপ্তি । আর এর কৃতিত্ব জনগণকে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের এ অর্জন তুলে ধরতে শনিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, এক যুগেই বদলে গেছে বাংলাদেশ। এ অর্জন দেশের আপামর জনসাধারণের। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এ মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি। এক যুগ আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়। আজকের বাংলাদেশ এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতায় এখন বাংলাদেশ। এ উত্তরণ এমন এক সময়ে এলো, যখন আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে। স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বা ইউএন-সিডিপির সব শর্ত পূরণ করে ২০১৮ সালে। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোনো দেশ পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদÐ পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পায়। উন্নয়নশীল দেশ হতে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হয় কমপক্ষে ১ হাজার ২৩০ মার্কিন ডলার। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ ডলার। মানবসম্পদ সূচকে নির্ধারিত মানদÐ ৬৬-এর বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন ৭৫.৪। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই অর্জনকে উৎসর্গ করছি আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মকে। যারা আজকের বাংলাদেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবে।
২০০৯-১০ সালে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ছিল ৫ হাজার ২৭১ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৪ হাজার ৪২১ মেগাওয়াটে উন্নীত এবং বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী জনসংখ্যা ৪৭ থেকে ৯৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বিশে^ ধান উৎপাদনে তৃতীয় এবং মাছ-মাংস, ডিম, শাকসবজি উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে দ্বিতীয় স্থানে এবং ইলিশ উৎপাদনকারী ১১ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। উন্নয়ন অভিযাত্রায় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর সুবিধা শহর থেকে প্রান্তিক গ্রাম পর্যায়েও বিস্তৃত হওয়ায় ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’-এর সুবিধা কাজে লাগিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেশখালী-মাতারবাড়ি সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পসহ বেশ কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, দুই ডজনের বেশি হাইটেক পার্ক এবং আইটি ভিলেজ নির্মাণের কাজ চলছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রম, দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি ভালোবাসায় বাংলাদেশ নতুন এক যুগে প্রবেশ করল। তার প্রতি রইল অসীম কৃতজ্ঞতা।