জন্মভূমি ডেস্ক : শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনার পর সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এডিসি হারুনকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই ঘটনায় এডিসি সানজিদা আফরিনকে রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে (পিটিসি) বদলি করা হতে পারে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে বিষয়টি গুজব বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দফতরে সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য দেন তিনি।
এডিসি হারুন ও সানজিদা-দুজনকেই রংপুর রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, না, না, এটি গুজব। হারুন সম্পর্কে আমাদের তাৎক্ষণিকভাবে যা করার ছিল, আমরা তা করেছি।
তিনি বলেন, এখন তার বিরুদ্ধে মামলা হবে, তার বিরুদ্ধে তদন্ত হবে। সবগুলোই তো একেকটি প্রক্রিয়া। তাৎক্ষণিকভাবে যা দরকার ছিল, আমরা তাকে সাসপেন্ড করেছি। এখন তদন্ত শুরু হয়ে তার নামে যদি মামলা হয়ে থাকে, মামলার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমার জানা মতে, যিনি ভুক্তভোগী, তিনি এখনো মামলা করেননি। মামলা করলে মামলার তদন্ত শুরু হবে। আর যেহেতু ঘটনা একটি ঘটেছে, এর বিভাগীয় মামলা তো হবেই। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হয়…(হবে)।
এ প্রেক্ষাপটে সরকার বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিব্রত কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষ মাত্রই ভুল করে থাকে। যে ভুল করে, তার শাস্তি হয়, এটাই স্বাভাবিক। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কেউ যদি অপরাধ করে, সেই অপরাধের শাস্তি তাকে পেতেই হবে, এটিই হলো মূলকথা।
জানা যায়, ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হকের স্ত্রী এডিসি সানজিদা আফরিন বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। সেখানে এডিসে হারুনও উপস্থিত ছিলেন। তাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক আছে এমন অভিযোগে সেদিন বাকবিতণ্ডায় জড়ান রাষ্ট্রপতির এপিএস ও এডিসি হারুন। এ সময় আজিজের সঙ্গে ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতা। পরবর্তীতে হারুনের ফোনে সেখানে শাহবাগ থানা পুলিশের একটা টিম যায়। রাষ্ট্রপতির এপিএস ও ছাত্রলীগ নেতাদের তারা ধরে থানায় নিয়ে আসেন। সেখানে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এডিসি হারুন তাদের থানায় নিয়ে বেদম পিটিয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেওয়ার পরও হারুনের সঙ্গে ১০-১৫ পুলিশ সদস্য মিলে তাদের পেটান।
বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে এডিসি হারুনকে রমনা বিভাগ থেকে সরিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দাঙ্গা দমন বা পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। একই দিন সন্ধ্যায় তাকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয়। পরদিন ১১ সেপ্টেম্বর বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সবশেষ তাকে পুলিশের রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে।
একই ঘটনায় এডিসি সানজিদা আফরিনকে রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে (পিটিসি) বদলি করা হতে পারে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হলে আজ তা পরিষ্কার করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এডিসি সানজিদার রংপুরে বদলির খবরটি গুজব।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এডিসি হারুনের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার (হারুন) বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। বিভাগীয় মামলা হতে পারে। ভুক্তভোগীও মামলা করতে পারেন।