শেখ সিরাজউদ্দৌলা লিংকন, কয়রা : খুলনার কয়রা উপকূলে সুপেয় পানি সংকট প্রবণ। উপকূলীয় এ এলাকার খাবার পানির তীব্র সঙ্কট মোকাবেলায় অতি দরিদ্র মানুষের বিশুদ্ধ পানি পানের বিষয়টি চিন্তা করে ভূগর্ভস্থ পানিকে পরিশোধিত করে আরও প্লান্টের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত (রিভার্স অসমোসিস) সুপেয় পানির শোধনাগারের উদ্বোধন করা হয়েছে।
১০ ফেব্রুয়ারী শনিবার বেলা ১২ টায় মহারাজপুর ইউনিয়নের মঠবাড়ি পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এর সহযোগিতায় বাংলাদেশ পুলিশ খুলনা রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের বাস্তবায়নে নির্মিত বিশুদ্ধ পানি শোধনাগারের ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে সুপেয় পানি শোধনাগারের শুভ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ পুলিশের খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক (বিপিএম, পিপিএম বার)।
পানি শোধনাগারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন,সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) সুশান্ত সরকার ( পিপিএম) । বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ডি সার্কেল সাইফুল ইসলাম, কয়রা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান, অন্যন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, জমিদাতা ব্রজেন্দ্রনাথ মন্ডল,
মঠবাড়ি ক্যাম্প ইনচার্জ এস আই আঃ মালেক, ইউপি সদস্য বিভূতি রায়, নুরুল ইসলাম খোকা, মাওলানা মাসুদূর রহমান, আবু সাঈদ মোল্যা, এস আই ওহিদ, এস আই ফরিদুজ্জামান, সাবেক কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সমাজসেবক আলামিন খোকনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও শতাধিক পানি শোধনাগারের সুবিধাভোগী নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) সুশান্ত সরকার ( পিপিএম সেবা) বলেন, ‘সুপেয় পানি এই এলাকার প্রধান সমস্যা। সমস্যা নিরসনে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে
অতিদরিদ্র মানুষ বিশুদ্ধ পানি পানের বিষয়টি চিন্তা করে বাংলাদেশ পুলিশের খুলনা রেঞ্জ-এর ডিআইজি মাইনুল হক বিপিএম (বার) পিপিএম স্যার -এর পরিকল্পনায় বাংলাদেশ পুলিশ পানি শোধনাগার করার উদ্যোগ নেয় যা বাংলাদেশ পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংক পিএলসি এর মাধ্যমে ১৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে এখানকার কয়েক হাজার পরিবারের মধ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করে দেওয়া জন্য পানি শোধনাগারটি নির্মাণ করা হয়। এতে বিশুদ্ধ পানির দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবেন তারা। উপকুলীয় এলাকার অতি দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ কমাতে বাংলাদেশ পুলিশের এই পানি শোধনাগার সার্বিক তদারকি করবেন কয়রা থানা পুলিশ।পানি শোধনাগার থেকে প্রতিদিন দশ হাজার লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
পানি শোধনাগারের জমিদাতা ব্রজেন্দ্রনাথ মন্ডল পুলিশের উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, উপকূলীয় এলাকার মানুষ বিশুদ্ধ পানি পাবে এটা ভেবে আমি পানি শোধনাগার স্থাপনের জমি দান করেছি। এমন মহৎ কাজে আমি জড়িত থাকতে পেরে আমার অনেক ভাল লাগছে।
সুপেয় পানির ব্যবস্থা পেয়ে মহারাজপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা খোদা বক্স ও মল্লিক বিশ্বাস বলেন, ‘এতদিন খাল,পুকুরের লোনা পানি ফিটকিরি দিয়ে ও দূর-দূরান্ত থেকে খাবার পানি এনে জীবন বাঁচিয়েছি। সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে দেওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের যে উপকার হলো, তা বলে বুঝাতে পারবো না।
স্থানীয় আলামিন খোকন বলেন, লবণাক্ততা দূরকারী ও সুপেয় পানির এ শোধনাগার স্থাপন করায় উপজেলা মহারাজপুরের প্রত্যন্ত এ এলাকার বাসিন্দাদের তীব্র পানির কষ্ট দূর হবে।দীর্ঘ দিনের ভোগান্তি লাঘব হবে। তারা বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।