এম সাইফুল ইসলাম
খুলনার ফুলতলার মো. হানিফ। পেশায় ভ্যানচালক। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় তার রিকশায় ওঠেন এ প্রতিবেদক। কথায় কথায় অসহায়ের মতো চেহারা করে হানিফ বলেন, পেটে খাবার নাই, মানতাম আবার লকডাউন।
সরকারের ত্রাণ সহায়তার কথা মুখে মুখেই থেকে যায়, বাস্তবে নেই। লকডাউনে খেটে খাওয়া মানুষদের ক্ষতিই বেশি দাবি করে তিনি বলেন, পকেটে টাকা না থাকলে, পেটে খাবার না গেলে বেঁচে থাকা আর মরে যাওয়া উভয়ই সমান। হানিফ যে বন্তিতে থাকেন সেখানে অন্তত শ দুয়েক পরিবার বসবাস করে। তার দাবি সেখানের একটি পরিবারও ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে বলে জানা নেই।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সারাদেশে চলছে এক সপ্তাহের লকডাউন। খুলনার দিনমজুর, অসহায়, খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষগুলো এই সময়টায় ত্রাণ সহায়তার আশায় থাকেন। অথচ অনকের ৩ দিনেও কারও পক্ষ থেকে ত্রাণ পৌঁছায়নি তাদের কাছে। তাদের দাবি, ত্রাণ সহায়তার কথা যা মুখে মুখেই।
নগরীর তেতুলতলা মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক রিকশাচালক সোহাগ হোসেন। তিনি থাকেন নগরীর এক বস্তিতে। লকডাউনের ৩ দিনে তাদের দরজায় ত্রাণ নিয়ে কেউ আসেননি বলে জানান তিনি। সোহাগ বলেন, ‘পেটে খাবার জুটলে আমিও লকডাউন মানতাম। কিন্তু পকেটে টাকা নেই অন্যদিকে পরিবারের বাজার-খরচ যখন দরকারি হয়ে পড়ে রাস্তায় বের হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।
টুটপাড়া কবরস্থান মোড়ে থাকেন মিরাজ। তার দাবি ত্রাণের ছিটেফোঁটাও পাননি করোনার দ্বিতয়ি এ ঢেউএ। তিনি বলেন, লকডাউনে না খেয়েই মনে হয় মরবো। দিন শেষে পারিবারিক খরচ চার’শ টাকা। একদিন রিকশা চালিয়ে এখন তিনশ টাকাও উপার্জন হয় না। বউ মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে। কোনওভাবে সংসার টেনে নিতাম। করোনার কারণে বাসা বাড়ির কাজও বন্ধ। বেঁচে থাকবো কিভাবে আল্লাহই ভালো জানেন।
মিরাজ বলেন, লকডাউনের আগে পত্র-প্রত্রিকা ও টেলিভিশনের খবরে দেখেছি, মানুষের মুখে মুখে শুনেছি রাজনেতিক দলের নেতারা দিনমজুর, অসহায় খেটে খাওয়া মানুষের পাশে থাকবেন। ত্রাণ সহায়তা দেবেন তারা। কিন্তু এর ছিটেফোঁটাও পাইনি।
জরুরি সেবা ও তথ্য এবং ত্রাণ সহায়তার জন্য হট লাইন ৩৩৩-এতে কল করে ত্রাণ চাইতে পারেন এই পরামর্শ দিলে সিরাজ বলেন, ‘আমরা লেখাপড়া জানি না। আমাদের কী এই দক্ষতা আছে?
কেসিসি প্যানেল মেয়র ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আকবার টিপু বলেন, কেসিসির ৩১ টি ওয়ার্ডে যাদের খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন তাদের জন্য আমাদের বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতা করেছি। কারও সহায়তার প্রয়োজন হলে আমাদের কাউন্সিলররা তাৎক্ষণিকভাবে তারা চেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সহায়তা করবেন।
করোনা ও লকডাউনে কেমন আছেন নিম্ন আয়ের মানুষ!
Leave a comment