পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নে বাড়ি শ্রমজীবী আ: রশিদের। প্রতিদিন তার রিক্সাখানা নিয়ে আসেন পিরোজপুর শহরে। সারাদিন রিক্সা চালিয়ে যা আয় হয় তা নিয়ে ফিরে যান বাড়িতে। একদিন রশিদের রিক্সায় চড়তে দিয়ে কথা হয় তার (রশিদের) সাথে। রশিদের কাছে জানতে চাই করোনা সংক্রমণ চলছে, মাক্স ব্যবহারের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা আছে। প্রচারণাও চালানো হয়েছে মাক্স ব্যবহারের জন্য। না মানলে জরিমানার বিধানও আছে। কেন ব্যবহার করছেন না মাক্স? কথা ঘুরিয়ে আ: রশিদ বললেন, ৯০ ভাগ লোক মাক্স ব্যবহার করেনা। আ: রশিদ বলেন, মোরা যেমন তেমন অনেক ভদ্দর লোকরা মাক্স ব্যবহার করেনা। আ: রশিদের রিক্সায় শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মিলল তার ভাষ্যের সত্যতা। মনে হলো করোনা চলে গেছে। হাটে-বাজারে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, সভা-সমাবেশে সামাজিক দূরত্ব মানছেনা কেউ। অনেকেই ব্যবহার করছেনা মাক্স।
রোববার পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে গেলে দেখা যায় রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। কোন রকম সামাজিক দূরত্বের বালাই নাই। দু-চার জনের মুখে মাক্স দেখা গেল। প্রতি ডাক্তারের কক্ষের সামনে লোকজনের ঠাসাঠাসি। চিকিৎসা নিতে আসা নান্টু নামে একজন জানান, করোনার শুরুর প্রথম দিকে ডাক্তাররা দূর থেকে রোগী দেখতেন এখন প্রায় আগের মত (করোনার আগে যে রকম রোগী দেখতেন) রোগী দেখছেন তারা।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মুহম্মাদ আল মুজাহিদ জানান, মাক্স পড়ার বিষয়ে মানুষ সচেতন না। মাক্স না পড়ার কারনে অনেককে জরিমানা করা হয়েছে, ভবিষ্যতেও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নাজমুল আলম জানান, মানুষের মধ্য থেকে করোনা ভিতি কমে গেছে এ কারনে মানুষ মাক্স ব্যবহারে অনুৎসাহী।
নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ওবায়দুর রহমান জানান, নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়, পাশাপাশি সচেতনতা মূলক প্রচারণা চালানো হয়। এরপর তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার মাক্স বিতরণ করা হয়েছে।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখা জানান, মানুষ সচেতন খুবই কম। আগে জরিমানা করা হয়েছে। এখন সচেতনামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ জানান, করোনা পরিস্থিতি অনেকদিন বিরাজ করার কারনে মানুষের মধ্যে সহনীয় প্রভাব চলে এসেছে। যে কারনে মানুষের মধ্যে উদাসীনতা লক্ষ করা যাচ্ছে।