
জন্মভূমি ডেস্ক : আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে ঝিনাইদহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন কালীগঞ্জের মাহমুদা নাসরিন লিমা।
জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশে শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী ক্যাটাগরিতে তিনি জেলা এবং উপজেলা দুটি পর্যায়েই এবার শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন।
আজ সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টার সময় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা মাহমুদা নাসরিন লিমার হাতে প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বকুল চন্দ্র কবিরাজ।
একই সময় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আরো চার নারীকে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অতিরিক্ত দায়িত্ব মুন্সি ফিরোজা সুলতানাসহ অনেকে।
অপরদিকে, কালীগঞ্জ উপজেলা সভাকক্ষে একই সময় আয়োজিত আরেকট অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন লিমাসহ আরও ৪ জন নারী। তারা হলেন, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা রত্না খাতুন, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখাই সাবিয়া সুলতানা লতা, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী জান্নাতুন্নেছা এবং সফল জননী নারী তাপসী রানী সাহা।
এ সকল জয়িতা তাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন আলম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা তাসলিমা বেগম প্রমুখ।
মাহমুদা নাসরিন লিমা কালীগঞ্জ উপজেলার বেথুলী গ্রামের মোশারফ হোসেন এবং সোনালী বেগম দম্পতির একমাত্র কন্যা। ২০০৭ সালে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয় লিমার। লেখাপড়া ঘর-সংসার এবং সন্তান সামলানোর পাশাপাশি নিজে কিছু করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠার প্রবল আগ্রহ ছিল তার মনে। তিনি প্রথমে ৪ টি জামা বাকিতে কিনে তা বিক্রি করে শুরু করেন ব্যবসা।
২০১৫ সালে লিমাস বুটিক নামক একটি ফেসবুক পেজ খুলে সেখানে গ্রামের নারীদের হাতে তৈরি পোশাক বিক্রি করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে তার ফেসবুক পেজে প্রদর্শিত নারীদের বাহারী পোশাকের ক্রেতা বাড়তে থাকে।
একই সাথে পেজটিতে বেড়ে যায় লাখ লাখ ফলোয়ার। এভাবেই সাফল্যের সিঁড়িতে পা রাখেন মাহমুদা নাসরিন লিমা।আর তার এই সফলতার পেছনে কাজ করেছেন প্রায় ৫০ গ্রামের ৭৫০ জন সংগ্রামী নারী। গ্রামের এসকল নারীরা লিমার নিজের করা ডিজাইনে নিপুন হাতের ছোঁয়ায় নজর কড়া পোশাক তৈরি করেন। এতে করে একদিকে যেমন গ্রামীণ নারীরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন, অন্যদিকে মাহমুদা নাসরিন লিমা ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়েছেন।
জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা পাওয়ায় নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে মাহমুদা নাসরিন লিমা বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আজকের এই অর্জন আমার আগামী দিনের পথ চলার পাথেয় হয়ে থাকবে। আমার শ্রেষ্ঠ জয়িতা হওয়ার সম্মাননা আমি উৎসর্গ করতে চাই আমার গ্রামের ঐসব সাধারণ নারী কর্মীদেরকে যাদের সহযোগিতা, আন্তরিকতা এবং ভালোবাসায় আমি এতদূর আসতে পেরেছি।