কেশবপুর প্রতিনিধি : যশোরের কেশবপুরে গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল ছড়াচ্ছে পাগল করা সুবাসিত ঘ্রাণ। পল্লীকবি উদ্দিনের ভাষায় আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা ফুল তুলিতে যাই ফুলের মালা গলায় দিয়ে মামার বাড়ি যাই’ কবিতার পঙূক্তিগুলো বাস্তব রুপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে মুকুলের পাগল করা ঘ্রান। দেখা গেছে আমের মুকুলে তাই এখন মৌমাছির গুজ্ঞন। মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ যেন জাদুর মত কাছে টানছে তাদের।
গাছের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় তাই চলছে তাই চলছে ভ্রমের সুর ব্যজ্ঞনা। শীতের স্নিগ্ধতার মধ্যে ছড়াচ্ছে সোনালী মুকুল। বছর ঘুরে আবারও তাই ব্যাকুল হয়ে উঠছে আম প্রেমীদের মন। এবার সময় এর আগে সোনালী মুকুলে ভরে গেছে কেশবপুর অঞ্চলের আম বাগান। মুকুলের ভারে নুইয়ে পড়েছে আমের শাখা। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে সোনালী স্বপ্নে ভাসছেন আম চাষিরা। বাগানের সারি সারি গাছে ঝুলছে আমের মুকুল ।
সুরভিত মুকুলের গন্ধ পাল্টিয়ে দিয়েছে এ অঞ্চলের বাতাস। তাই দক্ষিণা বাতাসে দোল খাচ্ছে আম চাষির স্বপ্ন। আশার আলো জ্বালিয়েছে আম বাগানের মালিক ও ব্যবসায়ীদের মন।
সরজমিনে কেশবপুর উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে নানা ফুলের সঙ্গে আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ আকাশে বাতাসে মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারার করে তুলেছে।
থোকায় থোকায় হলুদ রংঙের মুকুল ও গুটি আম দেখে ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীরা বাগানে দরদাম হাঁকাচ্ছে। আর বাগানের মালিকরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাক নাশক প্রয়োগ সহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ততার সময় পার করছেন। আম চাষিরা খুশি হলেও কৃষি কর্মকর্তা বলেন শীত বিদাই নেওয়ার আগেই আমের মুকুল আশা ভালো নয়। কেশবপুরে প্রধান প্রধান আমের আবাদ হচ্ছে আমরুপালি ,ফজলি, মল্লিকা, ল্যাংড়া, হিমসাগর হাড়িভাঙ্গা, গোপালভোগ, বারি ১০, বেনারসি, সিতাভোগ, ও রসে ভরা বোম্বাই। এরমধ্যে হিমসাগর ফজলি ল্যাংড়া আম্রপালির চাহিদা বেশি। কেশবপুর উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের আম চাষি আব্দুল বারী গাজী বলেন, এবছর আমার আম বাগানে পচুর পরিমাণে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত মুকুলে কোন রোগ আক্রমণ করিনি। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে তাহলে আশা করছি প্রতিটি আম গাছেই পর্যাপ্ত পরিমাণে আম ধরবে। উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের আম বাগানের মালিক আব্দুর জলিল সরদার বলেন, বাগানের অধিকাংশ গাছে এরই মধ্যে মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে পস্ফুটিত হয়েছে। গত বছর তিন বিঘা জমিতে আমের বাগান ছিল। যা বিক্রি করেছিলাম ৮ লক্ষ টাকা। এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে বাগান আছে। এলাকাতে ফসলি চাষের জমি রেখে অনেকেই আম বাগান করেছে। এবার আম গাছে খুব একটা কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হবে না। তবে ছত্রাক জনিত রোগে আমের মুকুলের গুটি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাহলে বাগানে দুই দফা ছত্রাক নাশক স্প্রে করতে হবে। মধ্যকুল গ্রামের আম বাগানের মালিক শাহিনুর রহমান বলেন, আম চাষে সহজেই লাভবান হওয়া যায় । যার কারনে অনেকেই এ পেশায় এগিয়ে আসছেন। আমের ফলন পেতে আমরা কৃষকরা বিভিন্ন সংগঠন থেকে পরামর্শ নিচ্ছি। আশা করা যায় গত বছরের থেকে এবছর আমের উৎপাদন বেশি হবে। আমি গত বছর এক বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছিলাম। যা বিক্রি করেছিলাম ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ বছর দেড় বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা আক্তার জানান, গত বছর থেকে এবছর কৃষকরা আম চাষের দিকে বেশি ঝুকে পড়েছেন। গাছে আমের মুকুল এসেছে। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে আম চাষিদের মুকুল যাতে নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।
কেশবপুরে আমের মুকুল ছড়াচ্ছে সুবাসিত ঘ্রাণ
![](https://dainikjanmobhumi.com/wp-content/uploads/2024/02/10-02-2024-32-330x220.jpg)
Leave a comment