কেশবপুর প্রতিনিধি : কেশবপুর পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের সঙ্গে বাজারে বিক্রি মূল্য ভালো পেয়ে এ বছর বেশ খুশি কেশবপুরের কৃষকরা।মৌসুমের প্রথম দিকে কেজি প্রতি ১২০ টাকা পেলেও এখন গুণগত মাণ ভেদে ১০০ টাকা থেকে ৮০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তারা। বেশি দামের আশায় ইতোমধ্যে অপরিপক্ক পেঁয়াজ উঠিয়ে কেউ-কেউ বাজারে তুলছেন। আবার অনেকে আগাম জাতের পেঁয়াজ উঠানো এবং হালি পেঁয়াজ রোপণেরও ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। পেঁয়াজ আবাদের অন্যতম এলাকা সমূহ মাঠ ও বাজারে সরেজমিন ঘুরে এসে এমন চিত্র তুলে ধরেছেন ভোরের দর্পণ সংবাদদাতা
চলতি রবি মওসুমে কেশবপুর কৃষি অফিস জানান কেশবপুর পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।বাজারে আসা নতুন পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে।
কেশবপুর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের পেঁয়াজ কৃষক আব্দুল আলী জানান, তিনি ১০ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। জমি থেকে পেঁয়াজ কাটা শেষ পর্যায়ে।ফলনও ভালো হয়েছে।তিনি প্রায় ৪০ মণ পেঁয়াজ পাবেন বলে আশাবাদী।দাম ভালো পাওয়ায় আগামিতে আরো বেশি জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করবেন বলে জানান।এ ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন পেঁয়াজ চাষি জানান, তারা গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন এ দু’মওসুমেই পেঁয়াজের চাষ করে থাকেন।
কেশবপুর সদর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাসের সাথে কথা বলে জানা যায় আলতাপোল ও মধ্যকুল মোট ৩ হেক্টর জমিতে কাটপেঁয়াজ আবাদ হয়েছিলো। তিনি জানান কৃষকরা বিঘা প্রতি ৮০ থেকে ৭৫ মন পেঁয়াজ পেয়েছে কৃষকরা। প্রকার ভেদে ১০০ টাকা থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস আরও জানান পেঁয়াজ চাষ বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা কৃষি করা হয়েছে। প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের দেয়া হয়েছে কৃষি প্রণোদনা।এ অঞ্চলের কৃষকরা বাজারে পেঁয়াজের অধিক যোগান দিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছেন।নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু করায় দামও কমতে শুরু করেছে। পেঁয়াজের উৎপাদন সারা বছর অব্যাহত রাখতে অধিক ফলনশীল নতুন-নতুন জাতের পেঁয়াজ চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
কাটপেঁয়াজের দাম এবং ফলন ভালো পাওয়া তার ব্লকে ভাতিপেঁয়াজ আবাদ হয় ৩ হেক্টর জমিতে। আলতাপোল গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান একবিঘা জমিতে কাটপেঁয়াজ ৭৫/৮০ মন পেয়েছি ,প্রতি মন পেঁয়াজ ৪০০০ টাকা থেকে ৩২০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় একই জমিতে ভাতিপেঁয়াজ আবাদ করেছি আশা করি এবার ফলন ও দাম ভালো পাবো বলে আশা রাখি।
ক্ষেতে মাঠে কৃষি শ্রমিকরা পাল্লা দিয়ে কাজ করছেন। তাদের সহযোগিতা করছেন নারীরা। কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গিয়ে দেখাযায়, পুরুষ শ্রমিকরা পেঁয়াজ উঠিয়ে জায়গায় জায়গায় স্তুপ করে রাখছেন। আর নারী শ্রমিকরা লম্বা লাইন বসিয়ে পেঁয়াজ কাটছেন। নারী শ্রমিক আলেয়া বেগম জানান, সংসারের অন্যান্য কাজ শেষে পেঁয়াজ কাটার কাজ করেন তিনি। এতে এক মণ পেঁয়াজ কাটার জন্য তিনি পারিশ্রমিক পান ৫০ টাকা। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ মণ পেঁয়াজ তুলতে পারেন। মঞ্জুয়ারা খাতুন জানান, তার স্বামী কৃষি কাজ করেন। তিনিও তাকে সহযোগিতা করেন। পেঁয়াজ মৌসুমে মাসে তিনি ৯ হাজার টাকা আয় করবেন।
কেশবপুর কৃষক অফিসার মাহমুদা আক্তার জানান এবছর মোট ৯৭ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। এবং প্রতি হেক্টর জমিতে সাড়ে ১০ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তিনি বলেন
পেঁয়াজ চাষ বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের দেয়া হয়েছে কৃষি প্রণোদনা।এ অঞ্চলের কৃষকরা বাজারে পেঁয়াজের অধিক যোগান দিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছেন।নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু করায় দামও কমতে শুরু।
কেশবপুরে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন
Leave a comment