শেখ আব্দুল হামিদ : আজ থেকে খুলনায় পর্দা উঠছে ২১শে বই মেলার। প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করবেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ¦ তালুকদার আব্দুল খালেক। বিশেষ অতিথি থাকবেন পুলিশ কমিশনার মো: মাসুদুর রহমান ভূঞা, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক, খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো: শহিদুল ইসলাম। মাস ব্যাপি এ বই মেলায় মোট ১০০টি স্টল থাকছে। স্টল গুলোর মধ্যে ৮০টি থাকছে বইয়ের স্টল এবং বাকী ২০টি থাকছে কুটির শিল্প ও খাদ্য সামগ্রীর দোকান। বেলা তিনটায় আনুষ্ঠানিক ভাবে মেলার উদ্বোধন করা হবে।
খুলনা বিভাগীয় সরকারি গনগ্রন্থাগার চত্বরে স্টল তৈরীর কর্মযজ্ঞ কাল শেষ হয়েছে। করোনা কালে বই মেলা যেনোতেনো ভাবে পালিত হলেও গেল দুবছর মেলায় ছিল উল্লেখযোগ্য পরিমান দর্শক ক্রেতার সমাগম। বইপ্রেমীরা মনে করছেন এবারের বই মেলায় হবে পূর্বের তুলনায় আরও ক্রেতা ও দর্শকদের মিলন মেলা। এবালেরের মেলায় নতুন লেখকদের লেখা বই বিশেষ স্থান অধিকার করবে বলে মেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
প্রতিবছর যে সব বই বিক্রেতা মেলায় অংশ নিয়ে থাকেন, তারা এবার আগে ভাগে স্টল বরাদ্দ নিয়েছেন। তারা মনে করেন প্রতি বছরের ন্যায় এবারের বই ব্যবসা হবে আরও লাভজনক। গত বছর ফেব্রুয়ারী এবং স্বাধীনতার মাস মিলিয়ে বই মেলা শুরু হয়। তখন বইয়ের স্টলের চেয়ে কসমেটিক্স স্টলে ক্রেতাদের ভিড় বেশী দেখা যায়। সন্ধ্যায় দর্শনার্থী লেখক আর বই প্রেমিদের আগমনে গ্রহন্থাগার চত্বর কানায় কানায় ভরে ওঠে। বইয়ের স্টল গুলোতে নারী পুরুষের আনাগোনা হলেও খুবই কম ক্রেতার হাতে বই দেখা যেতো। অমর একুশে এবং মাতৃভাষা দিবসের পর স্বাধিনতার মাসে বই মেলা চললেও খুবই কম লেখকের বই স্টলে এসেছিল। মেলায় মোট ৯৫টি স্টল দেয়া হয়। তার মধ্যে শুধু মাত্র বইয়ের স্টল ছিল ৫৫টি। মেলায় সাধারণত ছুটির দিন গুলোতে ক্রেতা এবং দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যায় অন্যান্য দিনের তুলনায় দ্বিগুন। গেল ২০২২ সালে খুলনা গণগ্রহন্থাগার চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত একুশে বই মেলার তৃতীয় দিনে ক্ষতির মুখে পড়েন বিক্রেতারা। কোন প্রকার সংকেত ছাড়াই হঠাৎ শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড়। মুহূর্তের মধ্যে ধুলায় ভরে যায় মেলা প্রাঙ্গন। দর্শক ক্রেতা শ্রোতা যে যেদিকে পারে ছুটে পালায়। মুহূর্তের মধ্যে জনশুন্য হয়ে পড়ে মেলা প্রাঙ্গন। সে কথা মাথায় রেখে কর্তৃপক্ষ এ বছর বই মেলার জন্য ভাষার মাসকেই বেছে নিয়েছেন। যাতে ওই ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে ব্যবসায়ীদের পড়তে না হয়।
খুলনায় প্রথম বই মেলা শুরু হয় খুলনা প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে। মেলার উদ্বোধন করেন সে সময়ের খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান। বইমেলা পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ ও ২০০৪ সালে সাহিত্য সংসদ চত্বরে মেলার আয়োজন করা হয়। ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সাহিত্য সংসদ বয়রার উদ্যোগে বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থগার প্রাঙ্গণে একুশে বই মেলা উদযাপন করা হয়। এর মধ্যে ২০০৯ সালে সাহিত্য সংসদ ও বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের যৌথ উদ্যোগে মেলার আয়োজন করা হয়। পরবর্তীতে ২০১০ সাল থেকে খুলনা জেলা প্রশাসন এ মেলার আয়োজন করে আসছে। খুলনা বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থগারের উপপরিচালক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান জানান, আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে বই মেলা অনুষ্ঠানের প্রচেষ্টা চলছে। মেলায় ১০০ স্টল থাকছে তার মধ্যে ৮০টি থাকবে বইয়ের স্টল।