দুই মামলায় ১১ জন জেল হাজতে
জন্মভূমি রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি চলাকালে আটককৃতদের মধ্য থেকে ১১ জনকে পৃথক দুটি মামলা গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশের উপর হামলা, ভাংচুর, সরকারীকাজে বাঁধা প্রদানের অভিযোগে বুধবার গভীর রাতে এস আই হাসানুর রশিদ বাদী হয়ে খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া সোনাডাঙ্গা থানায় দায়েরকৃত অপর একটি পুড়নো মামলায় আরো ৫ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পৃথক দুটি মামলায় শিক্ষার্থীসহ ১১ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। এ নিয়ে চলমান আন্দোলনে খুলনার বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা দায়ের করা হলো।
আদালত সূত্র জানায়, খুলনা থানায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ৬ জনকে বৃহস্পতিবার দুপুওে অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিম আনিসুর রহমানের আদালতে এবং সোনাডাঙ্গা থানায় আটককৃত ৫ জনকে গত ১৮/০৭/২৪ ইং তারিখের একটি মামলায় গ্রেপ্তর দেখিয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। এস আই সোহেল রানা বাদি হয়ে সোনাডাঙ্গা থানায় নাশকতার এ মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়ছিল।
আদালতে আসামিদের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী বেগম আক্তার জাহান রুকু, চৌধুরী আব্দুস সবুর, গোলাম মওলা, ফজলে হালিম লিটন, কালাম হোসেনসহ অর্ধশত আইনজীবি জামিন চান। পৃথক দুটি আদালত ১১ জনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে রোববার জামিনের শুনানীর দিন ধার্য করেন।
স্বজনদের কান্নায় আদালত পাড়ায় আবেগঘন পরিবেশ ঃ এদিকে আদালত প্রাঙ্গনে উপস্থিত স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। একজন শিক্ষার্থীর মা মিসেস জেসমিন কেঁদে বলেন, আমার অভাব অনটনের সংসার। স্বামী মাছের আড়তে কাজ করে। ছেলেকে কষ্ট করে একটি বেসরকারী পলিটেকনিক কলেজে লেখাপড়া করাচ্ছি। সন্তানকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য আমি বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত থানায় বসে অনেক কান্নাকাটি করেছি। কিন্তু ওসি স্যারের কাছে আমার ছেলেকে ভিক্ষা চেয়েছি তিনি আমার কোন কথাই শোনেনি। একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার ছেলেকে জেল হাজতে দেওয়া হলো। এখন আমার ছেলের ভবিষ্যত কি হবে। একথা বলে তিনি অঝোড়ে কাঁদতে থাকেন।
আরেক শিক্ষার্থীর মা বাহারুন বেগম বলেন, তার ছেলে সুন্দরবন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে। ও পরিবারের সবচাইতে ছোট ছেলে। আমার ছেলে দোষি না। কিন্তু তাকে মিথ্যা মামলা জড়ানো হলো। এর বিচার আল্লাহর কাছে ছেড়ে দিলেন। এসময়ে তার সাখে থাকা ছোট বোন মনি তার ভাইকে প্রিজন ভ্যান থেকে নামানোর সাথে সাথে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধওে কাঁদতে থাকেন। তখন আদালত পাড়ায় আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুরে নগরীর সাত রাস্তার মোড়ে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এদিকে খুলনায় কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নগরীর খুলনা, সোনাডাঙ্গা, হরিণটানা, দৌলতপুর ও খালিশপুর থানায় নাশকতার ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।