জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনায় বিআইডব্লিউটিএ-এর জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছে একটি প্রভাবশালী মহল।
সোমবার মহানগরীর শিপইয়ার্ড সড়কে এ জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করলে বাধার সম্মূখীন হয় কর্তৃপক্ষ। এসময়ে হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরে কাঠ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের বাধা-হামলার মুখে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করতে বাধ্য হয় সংস্থাটি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘ ৫০-৬০ বছর ধরে তারা পশ্চিম রূপসা নদীর তীরে কাঠের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। এই ব্যবসার সাথে ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। আগে কয়েকবার ব্যবসার স্থান বন্দোবস্ত নেওয়ার জন্য বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের কাছে তারা আবেদন করেন। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ তাদের আবেদনে কোনো সাড়া দেয়নি। হঠাৎ টিটু নামের একটি ব্যক্তিকে লিজ দেওয়া হয়েছে ওই জায়গা। সেকারণে তাদের উচ্ছেদ করার জন্য চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি নোটিশ দেয়।
ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকার যদি উন্নয়ন কাজে জায়গা চায় সেক্ষেত্রে ছেড়ে দিতে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু কোন ব্যক্তিকে লীজ দিলে তারা মানতে রাজি না।
জানা গেছে, রবিবার সকালে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিং করে ব্যবসায়ীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা সোমবার সকাল ১০ টায় রূপসা স্ট্যান্ড রোডে মানববন্ধনের আয়োজন করে এবং সড়কে কাঠের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করেন। মানববন্ধন কর্মসূচিতে কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. সেলিম কাজী সভাপতিত্ব করেন।
এতে বক্তারা বলেন, রূপসা নদীর পশ্চিম পাড়ে দীর্ঘ বছর যাবত কাঠ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করে আসছে। যার সঙ্গে কয়েক হাজার মানুষ জড়িত। হঠাৎ ব্যবসা তুলে দেওয়া হলে ব্যবসায়ী ও শ্রমিক, কর্মচারীরা পরিবার-পরিজনসহ অসহায় হয়ে পড়বে।
মো. রিয়াজ হুসাইনের পরিচালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন কেসিসির সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট জেসমিন পারভীন জলি, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ফারুক শেখ, মো. লোকমান হাকিম, এম এ খালেক, মো. তুরান, মো. কাইয়ুম মোল্লা, মেহেদী হাসান প্রমুখ।
বেলা ১১টার আগে সেখানে বিআইডব্লিউটিএ’র ম্যাজিস্ট্রেট তাসলিমা আক্তারের নেতৃত্বে স্কেভেটর দিয়ে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিলে শ্রমিকরা তাদের ওপর হামলা করেন। এ সময় তাদের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। হামলায় চারজন সামান্য আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ খুলনার উপ-পরিচালক মো. মোন্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা নিয়ম অনুযায়ী সেখানে অভিযান চালাতে যাই। কিন্তু সেখানে অবৈধ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এছাড়া তিনিসহ চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মেরে আহত করেন। এ বিষয়ে মামলা করা হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন খান বলেন, বিআইডব্লিউটিএ উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে কাঠ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা বাধা দেয়। একপর্যায়ে তারা বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর ও হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে অতিরিক্ত ফোর্স এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
খুলনায় উচ্ছেদ অভিযানে হামলা ও গাড়ি ভাংচুর
Leave a comment